মঙ্গলবার ব্রাজিলে রেকর্ড ৪৭৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যুর বিষয়ে বোলসোনারোকে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা। তার জবাব, ‘তাতে কী হয়েছে? আমি দুঃখিত।’ এসময় সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমাকে আপনারা কী করতে বলেন?’
শুরু থেকেই করোনা মহামারিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট। বরং একে ‘সামান্য ফ্লু’ মন্তব্য করে মহামারি নিয়ন্ত্রণে লকডাউনেরও বিরোধীতা করেছেন তিনি।
করোনার বিস্তার প্রতিরোধে গত মাসে লকডাউন নির্দেশনা জারি হয় ব্রাজিলের বেশ কয়েকটি বড় শহরে। সেসময় শহরগুলোর গভর্নর-মেয়রদের এমন সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করেন বোলসোনারো। এর মাধ্যমে ব্রাজিলের অর্থনীতি ধ্বংসের পায়তারা চলছে দাবি করে লকডাউনের নির্দেশদাতাদের ‘ক্রিমিনাল’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১৯ এপ্রিল রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় লকডাউনবিরোধীদের এক সমাবেশেও যোগ দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করলেও সে সময় মাস্ক বা গ্লাভসজাতীয় কোনও ধরনের সুরক্ষা উপকরণ পরেননি তিনি। ভাষণের সময় জনসম্মুখে কাশি দিতেও দেখা যায় তাকে।
এর আগে, মার্চের শেষের দিকে এক বক্তব্যে অনেকটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই করোনাভাইরাসকে ‘সামান্য ফ্লু’ বলে মন্তব্য করেন জেইর বোলসোনারো। ‘একদিন সবাই মারা যাবো’ উল্লেখ করে জনগণকে কাজে যোগ দিতেও আহ্বান জানান তিনি।
এর মধ্যেই গত ১৬ এপ্রিল মতবিরোধের কারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক ম্যানডেটাকে বরখাস্ত করেন বোলসোনারো। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয় দেশটির জনসাধারণের মধ্যে। এক জরিপে দেখা গেছে, ব্রাজিলের ৭৬ ভাগ মানুষ মনে করেন করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ম্যানডেটার পদক্ষেপগুলোই ভালো ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিপরীতে, বোলসোনারোর পক্ষে ভোট দেন মাত্র ৩৩ শতাংশ মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ হাজার ২৩৫। মারা গেছেন অন্তত ৫ হাজার ৮৩ জন। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলেই এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
সূত্র: আল জাজিরা, ভক্স, রয়টার্স