এই আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাটি বলছে, মহামারির ক্ষতি কমাতে হলে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
আইআরসির রিপোর্টের বরাতে বিবিসি জানায়, আফগানিস্তান ও সিরিয়ার মতো নাজুক দেশগুলোর প্রার্দুভাব মোকাবিলায় জরুরি তহবিল প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের মডেল ও তথ্য অনুযায়ী ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আইআরসি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় ৫০ কোটি থেকে ১০০ কোটি মানুষের মধ্যে করোনার সংক্রমণ হতে পারে। দরিদ্র, যুদ্ধবিদ্ধস্ত ও অস্থিতিশীল অন্তত ১২টি দেশে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় মারা যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনা মহামারির সংকট মোকাবিলার জন্য হাতে সময় নেই বলেও সর্তক করেছে সংস্থাটি।
আইআরসির প্রধান ডেভিড মিলব্যান্ড বলেন, ‘এই সংখ্যাগুলোকে সর্তকবার্তা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। মহামারি এখনো ভঙ্গুর ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে প্রকট আকারে দেখা যায়নি। এখন মূল কাজ হচ্ছে প্রস্তুত থাকা।’
তিনি আরও জানান, দাতা সংস্থা ও দেশগুলোর উচিত অতি দ্রুত জরুরি তহবিল গঠন করা। সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তার কথা বিবেচনা করে সব সরকারকে অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সংস্থাটি জানায়, কোনো কোনো দেশের পরিবারের আকার, জনসংখ্যার ঘনত্ব, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারি হিসাবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করছে সংস্থাটি।
চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইথআউট বর্ডারস (এমএসএফ) এর ইয়েমেনের ব্যবস্থাপক ক্যারোলিন সেঙ্গুইন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এখানে হাসপাতালের বাইরেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে অনেকেই মারা গিয়েছেন। কয়েকটি জায়গায় সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। তবে, পরীক্ষা করার সক্ষমতা না থাকায় সঠিকভাবে এ ব্যাপারে জানা যাচ্ছে না।’
সেঙ্গুইন জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দুর্বল রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হওয়া ইয়েমেনের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ইতোমধ্যেই কলেরা ও হামের প্রাদুর্ভাবে দুর্বল। তিনি বলেন, ‘এখানকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো সক্ষমতা নেই।’
এদিকে, দরিদ্র ও অস্থিতিশীল দেশগুলোর একটি বড় সমস্যা হলো চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব।
বিবিসি জানায়, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য মাত্র ১০টি ভেন্টিলেটর আছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেও চিকিৎসাব্যবস্থা করোনা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত নয়। এমনকী, ইউরোপের অন্যতম সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ ইতালিতেও প্রাদুর্ভাবের শুরু দিকে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য ৮০টি ভেন্টিলেটর ছিল।