খাদ্য, জ্বালানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের নতুন সংকট অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। মানুষ দোকানে খাবার পাচ্ছে না, থাকলেও সেটি ক্রয় করতে হচ্ছে আকাশছোঁয়া দামে, চাকরি নেই, বিদ্যুৎ নেই, এমনকি কলম্বোর মতো শহরে ঘোষণা দিয়ে দিনে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এমন কঠিন অবস্থা তো গৃহযুদ্ধের সময়ও ছিল না।
মানুষের পেটে খাবার না থাকা মানেই তো অস্থিরতা। দেশটিতে চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। আর এ পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। দেশের এমন খারাপ সময় ছুঁয়ে যাচ্ছে ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম দুই সেরা তারকা কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনেকে।
দেশের এই খারাপ পরিস্থিতিতে চুপ থাকতে পারেননি তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে দেশটির সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। দুজনে আইপিএল নিয়ে ব্যাস্ত থাকলেও দেশের এমন পরিস্থিতি তাদের নজর এড়ায়নি।
এক বার্তায় জয়াবর্ধনে লিখেন, “শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ও কারফিউ দেখে খুব খারাপ লাগছে। সরকার জনগণের প্রয়োজনীয়তাকে এভাবে উপেক্ষা করতে পারে না, তাদের প্রতিবাদ করার সব রকম অধিকার রয়েছে। যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের আটক করা মোটেও ভালো কাজ নয়।”
দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ লোকদের নিজ দায়িত্বে থেকে সরে যাওয়ার কথাও বলেছেন জয়াবর্ধনে, “সত্যিকারের নেতারা তাদের নিজেদের ভুল স্বীকার করে। আমাদের দেশের মানুষদের রক্ষা করতে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে, দুর্দশায় সবাইকে পাশে দাঁড়াতে হবে। দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে দিতে অবশ্যই ভালো একটা দল দরকার। নষ্ট করার মতো কোন সময় নেই। এখন বিনয়ী হওয়ার সময়, ঠিক কাজটা করার সময়, অজুহাতের নয়।”
অন্যদিকে সাঙ্গাকারা তার ইনস্টাগ্রাম বার্তায় লিখেছেন, “অকল্পনীয় কঠিন এক সময় পার করছে লঙ্কানরা। একটা দিন কাটাতে লোকদের দুর্দশা ও ভোগান্তি দেখাটা হৃদয়বিদারক, সময়ের সাথে সাথে দিনগুলো কঠিন হয়ে উঠছে। জনগণ সরব হচ্ছে, এ সমস্যার সমাধান চাইছে। কেউ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন এসবে, আবার কেউ অনাহূত সুযোগ নিতে চাইছেন। সঠিক কাজটা হবে তাঁদের কথা শোনা, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ধ্বংসাত্মক চিন্তাভাবনা সরিয়ে দেশের স্বার্থে সবার কাজ করা। জনগণ কারো শত্রু নয়। জনগণই হচ্ছে শ্রীলঙ্কা। সময় দ্রুত বয়ে যাচ্ছে। জনগণ ও তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে হবে অবশ্যই।”