মুনাফার বড় ধরনের এই প্রবৃদ্ধিতে মূলত তিনটি খাত ভূমিকা রেখেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য (আমদানি-রপ্তানি অর্থায়ন) সংক্রান্ত আয় থেকে এসেছে ৮৯ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। এক্সচেঞ্জ খাত থেকে মুনাফা হয়েছে ৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৪৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৮৩ কোটি টাকা মুনাফার যোগান দিয়েছে। এদের মধ্যে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেড ৪৭ কোটি ১০ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৯৩ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড ৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯১ শতাংশ।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) অনলাইন প্ল্যাটফরমে অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির আর্নিংস কল অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন ব্যাংকের সাম্প্রতিক কৌশলগত অবস্থান এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানান।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান আর্থিক প্রতিবেদনের নানা দিক বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার শেখ মোহাম্মদ মারুফ, হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল সাইফ উল্লাহ কাউসার, হেড অব ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট আসিফ এম সিদ্দিকী।
২০২১ সালে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ সিটি ব্যাংকের সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ১৫ পয়সা, যা ২০২০ সালে ছিল ৪ টাকা ৯ পয়সা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ব্যাংকটির আমানত এবং ঋণ ও আগাম-দুটোই বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়। ২০২০ সালে যেখানে ব্যাংকটির আমানতে ব্যয় ছিল ৫.৪ শতাংশ, ২০২১ সালে তা কমে ৪.৬ শতাংশ হয়।
২০২১ সালেও সিটি ব্যাংকের ঋণ ও আগাম বেড়েছে। আলোচিত বছরে ঋণ ও আগামের স্থিতি বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশ বেশি।
ঋণ ও আগাম বাড়লেও খেলাপি ঋণ বাড়েনি ব্যাংকটির। বরং তা আগের বছরের চেয়ে কমেছে।
অন্যদিকে করোনার সঙ্কটের মধ্যেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য (আমদানি-রপ্তানি) অর্থায়ন বেড়েছে। ২০২১ সালে সিটি ব্যাংক ৬৬০ কোটি ডলারের অর্থায়ন সুবিধা দিয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে, যা দেশের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭ শতাংশ। আলোচিত বছরে আমদানি বাণিজ্যে সিটি ব্যাংকের অর্থায়ন বেড়েছে ৪৬ শতাংশ, আর রপ্তানি বাণিজ্যে বেড়েছে ৮২.৬ শতাংশ।
আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন ব্যাংকের সাম্প্রতিক কৌশলগত অবস্থান এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানান। এসময় তিনি বলেন, সিটি ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি অনেক শক্তিশালী। তিনি বলেন, চলমান অতিমারিতে খেলাপি ঋণ অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এই বাস্তবতায় আমাদের খেলাপি ঋণ অনেক কম। ফলে আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পেরেছি। আমাদের মূলধনও অনেক শক্তিশালী।
তিনি আরো বলেন, সামনের দিনে নারীবান্ধব ব্যাংকিং, এসএমই ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি এবং সিটি ইসলামীর কার্যক্রম আরো বিস্তৃত করা হবে।