আজ মঙ্গলবার নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে স্বাক্ষরিত ঈদ-পূর্ব এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ঈদে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের চারটি সিটি করপোরেশনসহ এ তিন জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্বজনদের কাছে যায়। তাদের ২৫ শতাংশ যায় নৌপথে। আর সড়ক ও রেলপথে যায় যথাক্রমে ৫৫ ও ২০ শতাংশ। এই হিসেবে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ যায় লঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযানে। তবে নিয়মিত দুর্ঘটনা, দূরপাল্লার সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের প্রধান দুটি মাধ্যম শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরিস্বল্পতা ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই সড়কপথ এড়ানোর চেষ্টা করবেন। এর বিপরীতে নৌপথে যাত্রীসংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০ লাখ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআইডব্লিউটিএ গত ২১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে ছয়টি নৌপথের ৭০টি ছোট লঞ্চ চলাচল স্থগিত রেখেছে। তাই এবার ঈদে ৪০ লাখ ঘরমুখী নৌযাত্রীর একমাত্র মাধ্যম ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল। বিলাসবহুল ও বড় আয়তনের লঞ্চ চলাচলের জন্য ঢাকা থেকে বিভিন্ন উপকূলের বৈধ নৌপথের সংখ্যা ৪২টি হলেও যাত্রীস্বল্পতা ও নাব্য সংকটের কারণে মাত্র ৩৩টি নৌপথ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন ৮০-৮৫টি লঞ্চ এসব নৌপথ দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়।
এদিকে, ২৯ এপ্রিল থেকে ঈদের দাপ্তরিক ছুটি শুরু হলেও ২১ এপ্রিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধের দিন থেকেই মূলত ঈদযাত্রা শুরু হবে। তাই ওই দিন থেকে ২ মে পর্যন্ত ১২ দিনে ৪০ লাখ যাত্রী সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা নৌ খাতে নেই। এতে টার্মিনালে যেমন মারাত্মক অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হবে, তেমনি লঞ্চের ছাদসহ ডেকে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হবে। এ ছাড়া এবার দুর্যোগ মৌসুমেই উদ্যাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ কারণে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তির পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে। তাই নৌপথে নিরাপদ ঈদযাত্রার জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।