সোমবার (৪ মে) রাতে তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে। তবে তাদের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই। সকলেই সুস্থ আছেন। এ কারণে মঙ্গলবার (৫ মে) আবার তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের (সিওমেক) অধ্যক্ষ মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মইনুল হকের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করে জানান, সোমবার রাতে ১৬ ইন্টার্ন চিকিৎসকের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসকদের আভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপে এ নিয়ে নানা আলোচনা করা হয়। উপসর্গবিহীন এই করোনা শনাক্ত হওয়া নিয়ে অনেকে সন্দেহ ও সংশয় প্রকাশ করেন।
চিকিৎসকদের ফেসবুক গ্রুপে একজন চিকিৎসক বিষয়টি অবগত করে লেখেন, ‘সিওমেকের ৫৩তম ব্যাচের ইন্টার্নদের ১৬ জনের কোভিড-১৯ রিপোর্ট আজ পজিটিভ এসেছে। আশ্চর্য্য বিষয় হলো কারোরই কোনো করোনার সাইন/সিম্পটমস নেই…!’ করোনার কোনো লক্ষণ না থাকায় তাদের নমুনা আবারও পরীক্ষা করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফেসবুক গ্রুপে মো. সাইফুল হাই নামে এক চিকিৎসক লেখেন- ‘সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৫৩তম ব্যাচের ১৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ আসছে। আশা করি ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। পুনরায় করোনা টেস্টে সবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসুক এ প্রত্যাশা রইল।’
১৬ ইন্টার্ন চিকিৎসকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ময়নুল হক চিকিৎসকদের ফেসবুক গ্রুপে লেখেন, ‘৫৩তম ব্যাচ, তোমাদের নমুনা সংগ্রহ করে আবার পরীক্ষা করা হবে। ভয়ের কোনো কারণ নাই। আমরা তোমাদের সাথেই আছি। ইনশাল্লাহ পুনরায় পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হবে।–অধ্যক্ষ সিওমেক।’
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল ওসমানী হাসপাতালের গাজীপুর ফেরত এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর থেকে তাকে হাসপাতালের ইন্টার্ন হোস্টেলে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ওসমানীর ৭৮ জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এই কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৭৮ জনের মধ্য থেকেই সোমবার ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ এপ্রিল ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনিই সিলেটে করোনা শনাক্ত হওয়া প্রথম রোগী। পরে ১৫ এপ্রিল ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. মঈন মারা যান। এছাড়াও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে দুই প্রসূতিসহ চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে সিলেট বিভাগে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬০ জন।