টেকনাফের সেন্টমার্টিন ও শাহপরীরদ্বীপের পর এবার কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ধলঘাটায় এক জেলের জালে একসঙ্গে ধরা পড়েছে ১৫৯টি কালো পোয়া বা কালো পোপা।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলে মোজাম্মেল বহদ্দারের জালে মাছগুলো ধরা পড়ে। একসঙ্গে পাওয়া ১৫৯টি পোপা মাছের দাম হাঁকানো হয়েছে দুই কোটি টাকা।
মহেশখালীর ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোজাম্মেলের জালে ১৫৯টি কালো পোপা মাছ ধরা পড়েছে। খুবই গরিব জেলে মোজাম্মেল। তার পরিবারের দিকে আল্লাহ চোখ তুলে তাকিয়েছেন। এটা আল্লাহর নিয়ামত।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, শুনেছি মাছগুলোর দাম হাঁকানো হয়েছে দুই কোটি টাকা। কালো পোপা মাছের ফদনা (বায়ুথলি) খুবই দামি। তাই হয়তো দেড় কোটি টাকা হলে মাছগুলো বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন মোজাম্মেল।
মহেশখালী উপজেলার মেরিন ফিশারিজ অফিসার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘কালো পোপা আকারভেদে দাম কমবেশি হতে পারে। এককেজি সাইজের মাছের দাম হতে পারে এক হাজার টাকা। তবে সাইজ ১০ কেজি বা এর বেশি হলে দামটা আরও বেশি হবে। ধরা পড়া মাছগুলো আমি দেখেছি। এগুলো দুই কোটি টাকা দাম হাঁকানোর মতো নয়।’
এদিকে, এক জালে ১৫৯টি কালো পোপা মাছ ধরা পড়ার খবরে পুরো ধলঘাট ইউনিয়নে হইচই পড়ে গেছে। সবখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন মোজাম্মেলের ভাগ্য এবং কালো পোপা। এলাকার বেশিরভাগ মানুষ মাছগুলো দেখতে ছুটে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘আমরা খুবই খুশি মোজাম্মেল বহদ্দারের জালে এতগুলো দামি মাছ ধরা পড়ায়। এলাকার দরিদ্র কেউ স্বাবলম্বী হবে দেখলে মনে সুখ অনুভব হয়। মাছগুলো একনজর দেখতে গিয়েছিলাম। সবখানে এটা এখন আলোচনা বিষয়ে পরিণত হয়েছে।’
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, পুরুষ প্রজাতির কালো পোপা মাছের ফদনা বা বায়ুথলি মোটা ও বড় হয়। এ বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা যায় বলে বিভিন্ন দেশে এই মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ কারণে পুরুষ কালো পোপা খুবই দামি মাছ।
চলতি বছরজুড়ে সেন্টমার্টিনের জেলে গণির জালে বারবার উঠে এসেছে ৩০-৩৫ কেজি ওজনের পোপা মাছ। এরপর এক মণ ওজনের পোপা মাছ পেয়েছেন শাহপরীরদ্বীপের আরও একজন জেলে। এসব মাছ কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবারই প্রথম টেকনাফের পরিবর্তে মহেশখালীর উপকূলে পোপা মাছের ঝাঁক মিলেছে। তবে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) মোজাম্মেলের জালে পাওয়া মাছগুলো বিক্রি হয়নি।