জানাজা নামাজ শেষ মসজিদের দক্ষিণ ফটকে আবুল মাল আবদুল মুহিতের মরদেহ দেখতে তার বন্ধু, শুভাকাঙ্খীরা ভিড় করেন। বেলা সোয়া ১১টায় সবার দেখা শেষে মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নিয়ে যান তার পরিবারের সদস্যরা।
জানাজা নামাজে আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালসহ সরকারের বিভিন্ন এমপি, আমলা ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা অংশ নেন।
জানাজার আগে গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদে সাংবাদিকদের সঙ্গে স্মৃতিচারণ করেন এ কে আবদুল মোমেন। এসময় তিনি বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে একজন ‘ট্যালেন্ট অভিভাবককে’ হারিয়েছি। মুহিত ভাইয়ের মতো ট্যালেন্টেড লোক আমাদের পরিবারের আর নেই। তিনি খুবই মহৎ ছিলেন। আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম।
তিনি বলেন, মুহিত ভাই আমার ভাই হিসেবে, বন্ধু হিসেবে আমাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল। তার মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। মুহিতকে সিলেটের রায় নগরে সাহেব বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। ওখানে আমার বাবা-মা, দাদা-দাদিসহ সবার কবর রয়েছে।
সংসদ ভবনের সামনে জানাজার আয়োজন না করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, দুই বছর ধরে করোনার কারণে সংসদ ভবনের সামনে কারও জানাজা আয়োজন করা যায়নি। এখন গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে মুহিত ভাইয়ের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা শেষে সিলেটে নিয়ে দাফন করা হবে।
বার্ধক্যজনিত কারণে বহুমাত্রিক এই মানুষটি কয়েকমাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মুহিত ১৯৩৪ সালে সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা আবু আহমদ আবদুল হাফিজের দ্বিতীয় ছেলে মুহিত। তার মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুহিতের ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বাজেট ঘোষণা করা এই সাবেক অর্থমন্ত্রী দেশ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ ছিলেন। বাংলাদেশের উন্মেষ ও রূপান্তরের পুরোধা ব্যক্তিত্ব মুহিত সরকারি কর্মকর্তার সর্বোচ্চ পদ সচিব, মন্ত্রী, অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, লেখক, গবেষক, পরিবেশবিদ ইত্যাদি নানা পরিচয়ে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে রেখেছেন গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা।