গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হচ্ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনার হানায় বাংলাদেশ থেকেও রফতানি একদম কমে যায়। বাংলাদেশের বড় বাজার ইউরোপ আমেরিকাসহ অনেক দেশ করোনা আক্রান্ত। আরো সংক্রমন এড়াতে লক ডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশগুলো। এতে মার্কেট, শপিংমল, শোরুম বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রেতারা রপ্তানি আদেশ বাতিল অথবা কেউ স্থগিত করেছেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব পণ্য নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
করোনার প্রভাবে এপ্রিলের আগের মাস মার্চেও রফতানি কম হয়েছে। তবে মে মাসে করোনার প্রভাব পুরোপুরি বোঝা যায়নি। ফলে ওই মাসে রফতানি হ্রাসের হার ছিল মোটামুটি সহনীয়। মার্চে রফতানি কম ছিল ১৮ শতাংশ। তবে বিশ্ববাজারে করোনার হানা বাংলাদেশের আগেই শুরু হয়ে হওয়ায় ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ থেকে রপ্তানি আদেশ কমতে শুরু করে। মার্চে নতুন রফতানি আদেশ প্রায়ই বন্ধ ছিল। এপ্রিলে বলতে গেলে পণ্য জাহাজিকরণ হয়নি । একারণে রফতানি কমেছে রেকর্ড অংকের।
রফতানিকারকরা বলছেন, এখন পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা ভালো। বাতিল এবং স্থগিত করা অনেক রপ্তানি আদেশ ফিরে আসছে। নতুন রপ্তানি আদেশও আসতে শুরু করেছে। ফলে করোনার প্রভাব থেকে গেলেও আগামী মাসগুলোতে রপ্তানি ব্যাপক হারে কমবে না।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কম হয়েছে ৮৩ শতাংশের বেশি। মাসটিতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫৫ কোটি ডলার। গত বছরের এই মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩০৩ কোটি ডলার।
অন্যদিকে সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের জুন থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রপ্তানি কম হয়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশের বেশি। এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ২১ শমিক ২৪ শতাংশ। এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৭৪৫ কোটি ডলার। রপ্তানি হয়েছে দুই হাজার ৯৪৯ কোটি ডলারের। গত বছরের একই সময়ের এই পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার। প্রধান পণ্য তৈরি পোশাকসহ ছোট বড় সব পণ্যের একই রপ্তানি চিত্র। ব্যাতিক্রম শুুধ পাট। করোনাকালেও কাঁচাপাটসহ সব ধরনের পাটপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।