অনেকের হ্নদপিন্ডে থরথর কাপন, মৃত্যুর কালো
পতাকা নিয়ে এসেছে। অনেকে থেমে গেলেও
কেউ কেউ থামে না, কালো পতাকার
সম্মুখে বীরত্বের অহংকার। জয়ের আশা!
ডা. মঈন উদ্দিন, তোমায় থামাতে পারে নি।
তুমি শত শত গোলাপের নির্যাস থেকে সৃষ্ট গোলাপ।
কী এক বোধ তোমাকে জাগ্রত করেছে--- অসুস্থতার
সেবায় তোমার পিতার উচ্চকণ্ঠ-- মানুষের মুখের হাসি।
সন্তানের ভবিষ্যত, স্ত্রীর নীরব নিষেধ,
আত্মীয়-পরিজনের অনুরোধ কিংবা
নিজের প্রতি ভালোবাসা। দমাতে পারে নি!
কখন বাসা বেধেছে তোমার শরীরে,
কখন নিয়ে গেছে তোমায় মৃত্যুর মৃত
মিছিলে-- অদৃশ্য শক্তির থাবা। কতো
কষ্ট নিয়ে, কতো কষ্ট করে বিদায় নিয়েছো।
মৃত্যুর সময় মনে কি পড়েছে-- সন্তানের
মুখ কিংবা স্ত্রীর ঠোঁটে শেষ চুম্বন। এ এক স্মরণীয় অধ্যায়।
কেউ থামাতে পারে না। বীর চলে বীরত্ব মাথায়
নিয়ে, রেখে যায় কষ্টের কালো দাগ। নিঃশ্বাস
দেখেছো সারাজীবন, তোমার নিঃশ্বাস উড়ে যায়। বাতাসে!
কেউ জানে না, জানে তোমার মা!
তোমার চোখে তাকাতে পারি না, কী এক ক্ষিপ্র
চাহনি, সবকিছু তোমার কাছে তুচ্ছ।
মানুষের কাছে থাকতে গিয়ে বাতাসে উড়িয়েছো
প্রাণ, শক্ত হাতে খামছে ধরেছো মানচিত্র।
বুকের ভিতর গূঢ়গূঢ় শব্দ, অক্সিজেন।
তোমার তরে সতেরো কোটি প্রাণ, অশ্রু ঝড়েছে অবিরাম।
বীরত্ব নিয়ে বিদায় নিয়েছো, পরিশ্রমের
লাল চোখে আর কখনো তাকাবে না।
আর কখনো বলবে না স্ত্রীকে-
-- আমার শরীরটা এতো গরম কেন?
(স্মরণে: ডা. মঈন উদ্দিন)
তৌহিদুল হক
লেখক: কবি ও শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়