আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টক-শো প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি চ্যানেলে প্রচারিত হবে।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, জাতির জনকের অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শান্তি ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সব শান্তিরক্ষীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীগণ যেন আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন, এজন্য সরকারের সব প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
শান্তিরক্ষী সদস্যরা শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, সাহস ও নিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি শক্তিশালী শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন এবং দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক দেওয়া হয়েছে। এবার বাংলাদেশের দুই শান্তিরক্ষী লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্স করপোরাল মো. রবিউল মোল্লা এ সম্মানজনক পদক পেয়েছেন।
পদকপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মাহমুদুল হাসান মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে এবং ল্যান্স করপোরাল মো. রবিউল মোল্লা দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারান। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছ থেকে গত ২৬ মে এ পদক গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা।
বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশের ছয় হাজার ৮০২ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের নয়টি মিশনে কর্তব্যরত। দায়িত্বরত অবস্থায় এ পর্যন্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৬১ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী।