দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপি ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি রতনপুর গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমানকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর সড়কের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। রাত ১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান চলছিল। তবে র্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন রাতে মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতারের খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
রতনপুর গ্রুপের কাছে বর্তমানে ১০টি ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার ঋণ আটকে আছে। এই পাওনা আদায়ে গ্রুপটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ২০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের দুটি এনআই অ্যাক্ট মামলায় গ্রুপটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
আরএসআরএমের কাছ থেকে ২০১ কোটি টাকা খেলাপি আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির স্থাবর সম্পত্তি নিলামে তুলতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় সোনালী ব্যাংক। গত ৫ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করা নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেসার্স রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের কাছে সোনালী ব্যাংকের ২০১ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৫ টাকা পাওনা খেলাপি হয়েছে। এই পাওনার বিপরীতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় গ্রুপটির কারখানাসহ ১০০ শতক জমি বন্ধক রয়েছে। দীর্ঘদিনেও ঋণ পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ (সংশোধন ২০১০) এর ১২ ধারার বিধান মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটির স্থাপনাসহ এসব স্থাবর সম্পত্তি নিলামে তোলা হবে।
সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ও লালদীঘি করপোরেট শাখার প্রধান ইয়াকুব মজুমদার সাংবাদিকদের বলেছেন, ঋণের টাকা শোধ না করায় রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের স্থাপনাসহ ১০০ শতক জমি নিলামে তোলা হবে। শিগ্গিরই এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এই ঋণ আদায়ে গ্রুপটির বিরুদ্ধে অর্থঋণ ও এনআই অ্যাক্টে মোট ১২টি মামলা করেছে ব্যাংকটি। চট্টগ্রামের ইস্পাত খাতের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান রতনপুর গ্রুপ। যেটি আরএসআরএম নামে বেশি পরিচিত। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া গ্রুপটির বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। যেই কারখানা ঘিরে প্রায় ৮০০ কর্মী উত্পাদন কাজে নিয়োজিত ছিল। কিন্তু ৪০ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কারণে গ্রুপটির দুটি কারখানার উত্পাদন গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।