শনিবার (১১ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদার এর নিয়োগপ্রাপ্তিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। সংস্থাটির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে সদ্য নিয়োগ পাওয়া গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স- ২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ও প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রেখে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই সিনিয়র সচিব করোনা মহামারির মহাসংকটকালে অর্থনীতি চাঙা করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি ও দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্কার প্রক্রিয়া বিশেষ করে বাজেট সংস্কার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, অবসরভোগী সরকারি চাকুরেদের ইএফটির মাধ্যমে পেনশন প্রদান এবং সঞ্চয়পত্রের অটোমেশনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারই স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সালে ‘ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি অ্যাওয়ার্ড’ পান আব্দুর রউফ তালুকদার।
দেশের পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানা উদ্যোগে সবসময় পাশে ছিলেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তার। এবার পুঁজিবাজারবান্ধব আব্দুর রউফ তালুকদারের হাত ধরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান হওয়ার পথ খুলছে। পুঁজিবাজারকে মজবুত ভিত্তির উপর দাড় করাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বদা কাজ করবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কমিশনে যোগদানের পর থেকেই পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য নিয়োগ পাওয়া গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশের আর্থিক খাতের প্রধান দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সর্ম্পক্য ভালো থাকা দরকার।
আরও জানা যায়, দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছেন আব্দুর রউফ। তবে তার গভর্নরের নিয়োগের মাধ্যমে আগের চেয়ে অনেক বেশি উপকৃত হবে পুঁজিবাজার। যার নিয়োগে বিনিয়োগ সীমার জটিলতাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের পুঁজিবাজার নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব লাঘব হবে।
এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে দেশের আর্থিক খাতের প্রধান দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। যার পেছনে রয়েছে পুঁজিবাজারের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতিবাচক মনোভাব। এতে করে পুঁজিবাজারে কিছু মৌলিক সমস্যা তৈরী হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদারের নিয়োগের মাধ্যমে সেই সমস্যা সমাধানের দ্বার খুলতে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারবান্ধব আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঘনিষ্ঠতা এই রাস্তা সহজ করে তুলবে।
এর আগে আব্দুর রউফ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারসহ অর্থনৈতিক বিভিন্ন খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত রোড শো’তে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ইতিবাচক ব্রান্ডিং তুলে ধরতে আয়োজিত রোড শো-গুলোতে আব্দুর রউফ তালুকদার আন্তরিক অংশগ্রহণ দেশের পুঁজিবাজার তথা সামগ্রিক অর্থনীতির প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার প্রমাণ দেয় বলে বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদ শেষে দায়িত্ব নেবেন আব্দুর রউফ তালুকদার। ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে (বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচ) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন রউফ তালুকদার। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরে প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) হিসেবেও কাজ করেছেন এই কর্মকর্তা। ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই অর্থ সচিবের দায়িত্ব পান রউফ তালুকদার।