প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বর্তমানে ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাদের শক্তিশালী গার্মেন্টস খাত এইচঅ্যান্ডএম এবং গ্যাপের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোকে পোশাক সরবরাহ করে। দক্ষিণ এশীয় দেশটি সম্প্রতি আইএমএফের সহায়তা চেয়েছে। ঢাকার কর্মকর্তারা একে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, এটি প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের চাওয়া বেইলআউট তহবিলের মতো নয়।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জেরে দৈনিক বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়েছে এবং ডলারের রিজার্ভ কমে গেছে বাংলাদেশের। এ অবস্থায় অর্থসংস্থান শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-সহ অন্যান্য ঋণদাতাদের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করছে দেশটি।
গত বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ কোনো অর্থনৈতিক সংকটে নেই। আমরা ভবিষ্যতের যেকোনো প্রয়োজনের জন্য এই তহবিল সংগ্রহ করছি। আমাদের যখন দরকার হবে, তখন টাকা কোথায় পাবো?
অর্থমন্ত্রী জানান, প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছেও যেতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস বলেছে, বাংলাদেশের ওপর অথনৈতিক চাপ বাড়লেও সংকটের ঝুঁকি খুব কম। যদিও গত ১২ মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৩ শতাংশ কমে ৩৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, এটি এখনো প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট এবং আইএমএফ নির্ধারিত তিন মাসের কভারের চেয়ে বেশি।
সেই তুলনায় গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল ৯ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে মাত্র দুই মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে তারা। আর জুনের শেষে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ছিল ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে চীনের সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার কারেন্সি সোয়াপও অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিণ এশীয় এ দুই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আইএমএফের বেইলআউট বিলম্বিত হওয়ার ঝুঁকি এবং তাদের বাজারে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম এবং বিদেশি ব্যাংকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ভালো বাজার।
আহসান এইচ মনসুরের মতে, আইএমএফের এই কর্মসূচি ২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার নয় শতাংশের সীমা অপসারণ করতে বাংলাদেশকে উৎসাহিত করবে। আইএমএফ সম্ভবত ভর্তুকি কমানো বা বাতিল করার জন্যেও পরামর্শ দেবে।
আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটির সাবেক এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এই কর্মসূচি যদি বাংলাদেশে ‘হাউজ ক্লিনিং’-এর সূচনা করে, তবে তা হবে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন।
সূত্র: ব্লুমবার্গ