রোববার (৭ আগস্ট) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের জিডিআই উদ্যোগের কথা আমাদের জানিয়েছে। আমরা বলেছি, সম্প্রতি অনেকে এ ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আসছে। আমরা কোনো দলে যাইনি। চীনের প্রস্তাব স্টাডি করব, তারপর আমাদের অবস্থান জানাব।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে মোমেন বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের যে সুসম্পর্ক আছে, সেটিকে অনেক দূর নিয়ে যেতে চায়। তারা (চীন) আমাদের ভিশন-৪১ অর্জন ও সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করতে চায়।
তাইওয়ানকে সমর্থন দিলে অন্যদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক খারাপ হতে পারে বা তৃতীয় কোনো দেশ হয়তো বিষয়টিকে ভালোভাবে নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনকে সমর্থন দিলে কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ তার ভারসাম্যপূর্ণ নীতি অব্যাহত রাখবে। আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমাদের একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি আছে। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক রেখেই চলেছি। কেউ কেউ কমবেশি অসন্তুষ্ট হবে। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটি বজায় রেখেছি।
বাংলাদেশ ‘এক চীন নীতি’ সমর্থন করছে জানিয়ে মোমেন বলেন, আমরা ওয়ান চায়না পলিসিকে নিয়েছি। চীন একটিই। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিভিন্ন দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিজ দেশকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। আর এ বিচ্ছিন্নতায় কোনো কোনো পক্ষ উসকে দিচ্ছে। তবে আমরা বলেছি, আমরা সব সময় এক চীন নীতিতে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। বর্তমানে বিশ্বের যে অবস্থা, সেখানে নতুন করে একটি স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন পৃথিবী একটি সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় আমাদের একটি অবস্থান নিতে হবে।
বৈঠকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই এবং নতুন করে চীনা লোন নেওয়ার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, এটি আলোচনা হয়নি। নতুন লোন নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে, মোমেন-ওয়াং ই’র বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, জিডিআই ছাড়াও চীনের প্রেসিডেন্টের আরেক উদ্যোগ গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই) নিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, জিডিআই ও জিএসআই নিয়ে তারা (চীন) বিস্তারিতভাবে আমাদের জানিয়েছে। এটি আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। কারণ আমাদের অগ্রাধিকারে অন্য আরও অনেক বিষয় ছিল। তবে তারা তাদের অবস্থান আমাদের জানিয়েছে।