রোববার (১৪ আগস্ট) দিনগত রাত পৌনে ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে এক আলোচনা সভা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
‘বঙ্গবন্ধু-শোক আমাদের শক্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা এবং মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাত চারটার সময় হঠাৎ আমার বন্ধু আমাকে টেলিফোন করে বলে, সারা শহর আর্মিতে ভরে গিয়েছে, ঘটনা কী? তখন বাড়ির বাইরে এসে দেখি আর্মির ট্যাংক আর গাড়ির আওয়াজ। রাত সাড়ে চারটার দিকে রেডিও চালু করে শুনি খুনি ডালিমের গলার আওয়াজ। তখন বিশ্বাস হচ্ছিল না বঙ্গবন্ধুকে কোনো বাঙালি হত্যা করতে পারে।
তিনি বলেন, যে নেতা তার সারাজীবন বাঙালির জন্য দিয়ে গেছেন, যে নেতা ৬ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাঙালিকে একত্রিত করেছিলেন, যিনি ধাপে ধাপে আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীন একটি দেশ দিয়ে গেলেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল। যে নেতা বাংলাদেশের কারাগারে কাটিয়েছেন ৩ হাজার ৫৩ দিন এবং পাকিস্তান কারাগারে কাটিয়েছেন প্রায় এক বছর। তার ৫৫ বছরের জীবনে কারাগারের সময় বাদ দিলে চিন্তা করে দেখুন বঙ্গবন্ধু তার পরিবারকে কতটুকু সময় দিয়েছেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খুনিরা ভেবেছিল যে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ যদি জীবিত থাকে সে ঘুরে দাঁড়াবে। তাই সে সময় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তবে তার দুই কন্যা বিদেশে থাকায় বেঁচে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮৭ সালে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চান, জনমত গঠন করেন। সেই বিচার আমরা পেয়েছি। কয়েকজন খুনির ফাঁসি হয়েছে। যে কয়েকজন বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছেন তাদের চিহ্নিত করেছি। তারা পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকুক আমরা তাদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করবো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দিয়ে আমাদের হৃদয়ের কালো দাগ কিছুটা মুছেছে। তবে আমাদের মনে হয়, বঙ্গোপসাগরের সব পানি দিয়ে ধুলেও আমাদের সেই কালো দাগ মুছে ফেলা যাবে না। এখনো বিদেশে গেলে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, তোমরা তো সেই জাতি যারা নিজেদের জাতির পিতাকে হত্যা করেছো।
আলোচনা শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন অতিথিরা।