বুধবার (১৭ আগস্ট) এই শোক সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিএসইর আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ।
অন্যান্য আলোচকরা হলেন: সিএসইর পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ । এ সময় সিএসইর পরিচালক প্রোফেসর এস এম সালামত উল্লাহ ভুঁইয়া, মো. রেজাউল ইসলাম এবং জনাব মোঃ সিদ্দিকুর রহমান উপস্থিথ ছিলেন ।
এতে আরও অংশগ্রহণ করেন, সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ গোলাম ফারুক এবং সিএসই এর সকল কর্মকর্তাবৃন্দ ।
প্রধান আলোচক সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয় । আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপকে এবং তাঁর ও তাঁর পরিবারের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস । । তাকে নিয়ে এই সীমিত সময়ে আলচনায় করে শেষ করা যাবে না । তাঁর ক্ষণস্থায়ী জীবনে যা ই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন । ১৪ বছর কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরার সময়ই প্রথম তাঁর দাবি দাওয়া আদায়ের প্রবল পদক্ষেপ আমারা দেখতে পাই । সেসময়ে তিনি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি আদায়ের জন্য বহিষ্কৃত হন তবুও তিনি মাথা নত করেন নি । সেসময় বাঙ্গালী জাতি ছিল সব দিকে শোষিত এবং অবহেলিত, এমনকি তারা কর্মস্থলে এবং ব্যবসার ক্ষেত্রেও ছিল তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যবহারের স্বীকার । সরকারী বা পদস্থ কোন স্থানে তাদেরকে সুযোগ দেয়া হত না । বঙ্গবন্ধু এইসব ব্যাপারেও ছিলেন সোচ্চার , চেয়েছেন পরিবর্তন , এমনকি পদক্ষেপ ও নিয়েছিলেন বাংলাদশে কন্ট্রোলার অফিস করার।
স্বাধীন দেশে তিনি পা রাখেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি । ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত নয় মাসব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সমগ্র বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল । শেখ মুজিব এই ধ্বংসযজ্ঞকে “মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ” হিসেবে উল্লেখ করে ৩০ লাখ মানুষ নিহত ও ২ লাখ নারীর ধর্ষিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন । বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময় । ১৯৭২ সালে অর্থনীতির আকার মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। সঞ্চয় জিডিপির মাত্র ৩ শতাংশ। বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ। পুরো অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত। এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, দেশের ভেতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করার চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি অল্প সময়েই প্রণয়ন করেছেন সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও শিক্ষা কমিশন। স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করেছেন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সমান গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের ওপর। আমরা আজ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রনয়নের কাজ করছি যার ভিত্তি হল বঙ্গবন্ধুর সেই প্রথম পরিকল্পনার অংশ , এমনকি শিল্প ক্ষেত্রে ও যে পরিবর্তন তাও তাঁর দূরদর্শী চিন্তার অংশ।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত । বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন দেশ লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা । পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে । সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে ।