ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় সম্মান বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর ইংল্যান্ডে চলে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য। তার ছোট চাচা সায়ীদুল হাসান ছিলেন লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের বাণিজ্যসচিব। চাচার কথায় ১৯৫৪ সালে আবেদ ভর্তি হন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগে। দুবছর বাদে সেখান থেকে লন্ডনে গিয়ে ভর্তি হন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে। ১৯৬২ সালে ‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এর ওপর তিনি প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করেন। লন্ডনে থাকা অবস্থায় ১৯৫৮ সালে তার মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন মারা যান।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের কর্মজীবনের শুরু:
১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন, কানাডা ও আমেরিকায় বিভিন্ন চাকরি করেন ফজলে হাসান আবেদ। দেশে ফেরেন ১৯৬৮ সালে। ১৯৭০ সালে যোগ দেন শেল অয়েল কোম্পানির চট্টগ্রাম কার্যালয়ে। পদোন্নতি লাভ করে ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান।
শেল কোম্পানিতে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সন্দ্বীপ, হাতিয়া, মনপুরা এই তিনটি দ্বীপের লাখ লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারান। এ অবস্থায় স্যার আবেদ তার বন্ধু ব্যারিস্টার ভিকারুল ইসলাম চৌধুরী, সহকর্মী কায়সার জামান, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আকবর কবীর এবং নটরডেম কলেজের শিক্ষক ফাদার টিম মিলে সিদ্ধান্ত নেন ত্রাণ বিতরণের। ‘হেলপ’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলে মনপুরা দ্বীপের বিপন্ন ও বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। ত্রাণসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বিধ্বস্ত ঘরবাড়িও তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান:
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্যার ফজলে হাসান আবেদ শেল অয়েল কোম্পানির উচ্চপদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইসলামাবাদ ও কাবুল হয়ে লন্ডনে চলে যান। ১৯৭১ সালের মে মাসে লন্ডনে গিয়ে সমমনা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সম্পৃক্ত হন স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াইয়ে। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য গড়ে তোলেন ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামের দুটি সংগঠন।
অ্যাকশন বাংলাদেশের কাজ ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সমর্থন আদায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে জনমত তৈরি এবং পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত কার্যকলাপ বন্ধে ইউরোপীয় দেশসমূহের সরকারকে সক্রিয় করে তোলা।
হেলপ বাংলাদেশের কাজ ছিল অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরি, প্রচারপত্র বিলি, টাইমস অব লন্ডনে লেখা ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা, রেডিও-টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়া, ইউরোপীয় দেশসমূহের পার্লামেন্ট সদস্যদের আলোচনার মাধ্যমে স্বদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিবিধ কর্মতৎপরতা পরিচালনা করা। পথনাটক, তহবিল সংগ্রহসহ নানা ধরনের কাজেও তিনি ও তার বন্ধুরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন।
ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা:
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ফজলে হাসান আবেদ সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ফিরে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া ১ কোটি শরণার্থী দেশে ফিরে আসতে শুরু করে। আবেদ ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযুদ্ধকালে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া সিলেটের সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই অঞ্চলকে তিনি তার কর্ম এলাকা হিসেবে বেছে নেন। ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিসটেন্স কমিটি (ব্র্যাক) শাল্লা প্রকল্পের প্রথম পর্বের সূচনা হয়।
ব্রাক থেকে অবসর গ্রহণ:
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৭২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক ব্যাংক।
২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১ থেকে ২০০৮ এবং ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্যার ফজলে আবেদ ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ব্র্যাকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং চেয়ার এমেরিটাস হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে ২৪ জুলাই তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২৬ আগষ্ট ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:
১৯৮১ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির হার্ভার্ড ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের ভিজিটিং স্কলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যার আবেদ। পরে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশের (এডাব) চেয়ারপারসন হিসেবে নেন। একই সময়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ফেলো হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জেনেভার এনজিও কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন হেলথ রিসার্চ ফর ডেভেলপমেন্টের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যার আবেদ
১৯৯০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গণস্বাক্ষরতা অভিযানের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে এনজিও ফোরাম ফর ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশনের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ইন্ডিপেনডেন্ট সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে সার্কের সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ এবং ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল মেয়াদে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনে তিনি।
১৯৯৪ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সদস্য, ১৯৯৮ ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সাসেক্স ইউনিভার্সিটির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এবং ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (আইডিএস) সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), ফিলিপাইনের বোর্ড অব গভর্নরস, ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন স্যার আবেদ।
২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের (ইনাফি) গ্লোবাল চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের এই কৃতি সন্তান। এ ছাড়া ২০০৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইউএন কমিশন অন লিগ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট অব দি পুওর’র (সিএলইপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা এই বীর বাঙালিকে ২০১০ সালে জাতিসংঘের তদানীন্তন মহাসচিব বান কি মুন বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ‘স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গে’র একজন হিসেবে নিযুক্তি প্রদান করেন। তাকে ‘গ্লোবাল গ্রেট’ স্বীকৃতিতে ভূষিত করে অশোকা। এই প্রতিষ্ঠানের ‘গ্লোবাল অ্যাকাডেমি ফর সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলেন আবেদ।
২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস গ্রুপ অব এমিনেন্ট পারসনস ফর লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দেশের সেরা এই সন্তান। ২০১২ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস লিড গ্রুপ অব দি স্কেলিং এবং অশোকা গ্লোবাল অ্যাকাডেমি ফর সোশ্যাল আন্ট্রোপ্রেনিওরশিপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের পুরস্কার অর্জন:
১. ২০১৯ সালে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে কয়েক দশকব্যাপী অনবদ্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ নেদারল্যান্ডসের নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অব অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে অত্যন্ত মর্যাদাসূচক এবং অর্থমূল্যের দিক থেকে সবচেয়ে বড় পুরস্কার ইদান প্রাইজ লাভ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। হংকংভিত্তিক ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন এই পুরস্কার ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে প্রাক-শৈশব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ লেগো ফাউন্ডেশন, ডেনমার্ক প্রদত্ত লেগো পুরস্কার, ২০১৭ সালে দারিদ্র্যপীড়িত লক্ষ-কোটি মানুষের সম্ভাবনা বিকাশে সুযোগ সৃষ্টির জন্য লুডাটো সি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬ সালে গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরাম অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ, ওয়াশিংটন ডিসি প্রদত্ত হোসে এডগারডো ক্যাম্পোস কোলাবোরেটিভ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, একই বছর জনস্বাস্থ্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত টমাস ফ্রান্সিস জুনিয়র মেডেল অব গ্লোবাল পাবলিক হেলথ পুরস্কার লাভ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ।
খাদ্য ও কৃষিক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পান তিনি। ২০১৪ সালে রাশিয়ান চিলড্রেন ফান্ড কর্তৃক ‘লেভ তলস্তয়’ স্বর্ণপদক এবং স্পেনের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’ (অর্ডেন ডেল মেরিটো সিভিল) লাভ করেন
২০১৪ সালে নারীর অধিকার রক্ষা ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ট্রাস্ট উইমেন হিরো অ্যাওয়ার্ড’, ২০১৩ সালে ওপেন সোসাইটি প্রাইজ, ২০১১ সালে কাতার ফাউন্ডেশন প্রবর্তিত শিক্ষাক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘ওয়াইজ প্রাইজ’, ২০১০ সালে দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানজনক ‘নাইটহুড’ উপাধিতে ভূষিত হন।
২০০৯ সালে দ্য ওয়ার্ল্ড আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ ফোরামের পক্ষ থেকে আন্ট্রপ্রেনিওর ফর দ্য ওয়ার্ল্ড লাভ করেন ফজলে হাসান আবেদ। এ ছাড়া ২০০৮ সালে ডেভিড রকফেলার ব্রিজিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং ফেলোশিপ অব এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ২০০৭ সালে হেনরি আর. ক্রাভিস প্রাইজ ইন লিডারশিপ এবং ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্তৃক আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।
২০০৪ সালে গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ ও ইউএনডিপির মানবউন্নয়ন বিষয়ক পুরস্কার মাহবুবুল হক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই নাইট। এ ছাড়া ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর পাবলিক লিডারশিপ প্রদত্ত গ্লেইটসম্যান ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ২০০২ সালে দ্য শোয়াব ফাউন্ডেশন সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ প্রতিষ্ঠান থেকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওর’ স্বীকৃতি, ২০০১ সালে সুইডেন থেকে ওলফ পামে অ্যাওয়ার্ড, ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো নোমা পুরস্কার এবং ১৯৮০ সালে র্যামেন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।
ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর আবেদের অর্জন:
২০০৮ সালে মানবিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য কনরাড এন হিলটন হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৯২ সালে ইউনিসেফ মরিস পেট অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯০ সালে অ্যালানশন ফেইনস্টেইন ওয়ার্ল্ড হাঙ্গার পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো নোমা পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের অর্জিত সম্মানসূচক ডিগ্রিসমূহ:
২০১৬ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্র্যাডফোর্ড থেকে ডক্টর অব এডুকেশন, ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব দি সাউথ থেকে ডক্টর অব সিভিল লজ এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি, ২০১২ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি, ২০১০ যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি, ২০০৯ জাপানের রিক্কিও ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট অব হিউমেন লেটার্স এবং ২০০৯ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লেটার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ফজলে হাসান আবেদ প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে কাজ করছে। বিশ্বের অন্যতম বড় এনজিও হিসেবে এটি স্বীকৃত।