এ সময়ে বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে গেছে কম্বোডিয়া। যদিও এফডিআই প্রবাহ নিয়ে আঙ্কটাড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের গরমিল দেখা গেছে।
প্রতি বছর জুন মাসে সারা বিশ্বের এফডিআই প্রবাহ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আঙ্কটাড। সেই ধারাবাহিকতায় আজ প্রকাশ হতে যাচ্ছে সংস্থাটির ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট-২০২০। এবারের প্রতিবেদনের প্রতিপাদ্য ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রোডাকশন বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’। প্রতিবেদনটিতে কভিড-১৯ পরবর্তী বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রবাহে মহামারীর প্রভাব ও এর গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার নয়টি স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) গত আট বছরে প্রথমবারের মতো এফডিআই প্রবাহ ২৭ শতাংশ কমে ৯ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। এর মধ্যে শীর্ষ তিন এফডিআই গ্রহীতা দেশ হচ্ছে কম্বোডিয়া, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। এশিয়ার নয়টি এলডিসির মোট এফডিআই প্রবাহের ৯৪ শতাংশই এ তিনটি দেশের।
তবে এই তিনটি দেশের মধ্যে কম্বোডিয়ায় এফডিআই প্রবাহ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে তা কমেছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় ৫৬ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার এফডিআই এসেছে। এর আগে ২০১৮ সালে একটি মার্জার অ্যাকুইজিশন উদ্যোগে প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড পরিমাণ এফডিআই প্রবাহ ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে এফডিআই আকর্ষণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কাঠামোগত দুর্বলতা ও ভঙ্গুরতার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এলডিসিতে মোট এফডিআই প্রবাহ ছিল ২১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ কম। গোটা বিশ্বের এফডিআই প্রবাহে এলডিসির এফডিআইয়ের অংশ ছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশ।
এলডিসিগুলোর মধ্যে এফডিআই আকর্ষণে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইথিওপিয়া, মোজাম্বিক ও বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে এফডিআই প্রবাহ কম্বোডিয়ায় ছিল ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, মিয়ানমারে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন, ইথিওপিয়ায় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন, মোজাম্বিকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন এবং বাংলাদেশে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।
আঙ্কটাডের ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২০-এ বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এফডিআই গ্রহণকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আঙ্কটাডের হিসাবে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এফডিআই প্রবাহ ২০১৮ সালের ৫৬ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের এফডিআই প্রবাহের তথ্যে রয়েছে ভিন্ন পরিসংখ্যান। ২০১৯ সাল শেষ হওয়ার পর চলতি মে মাসে এফডিআইয়ের প্রভিশনাল বা অস্থায়ী পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে নিট এফডিআই ছিল ২৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ২০১৮ সালে যার পরিমাণ ছিল ৩৬১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরে এফডিআই ৭৩ কোটি ৯৩ লাখ ডলার বা ২০ শতাংশ কম এসেছে। আঙ্কটাড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে বড় ধরনের গরমিল দেখা যাচ্ছে। হিসাব অনুযায়ী আঙ্কটাড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে ১২৭ কোটি ডলারের পার্থক্য রয়েছে।