“রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে কোনো লাভ নেই”

রাশিয়া থেকে ক্রুড (অপরিশোধিত) তেল আমদানি করে কোনো লাভ নেই। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের যে ধরন, সেটি বাংলাদেশে এনে পরিশোধন করা সম্ভব নয়। তাই রাশিয়া থেকে ক্রুড তেল আমদানির সুযোগ পেলেও তা ব্যবহার উপযোগী করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

শনিবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের সংগঠন ওভারসিজ করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওক্যাব) আয়োজিত ‘মিট দ্য ওক্যাব’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা দেশের জ্বালানি সংকট থেকে শুরু করে লোডশেডিং পরিস্থিতি, বিনিয়োগ, বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণে সুদের হারসহ নানা প্রসঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন।

সালমান এফ রহমান জানান, রাশিয়া থেকে ক্রুড (অপরিশোধিত) তেল আমদানি করেও জ্বালানি সংকটের সমাধান হবে না। কারণ, রাশিয়া থেকে আনা ক্রুড তেল ব্যবহার উপযোগী করার সক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের যে পরিশোধন ব্যবস্থা, সেখানে শুধু মধ্যপ্রাচ্যের অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করা সম্ভব।

তিনি জানান, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের যে ধরন, সেটি আমাদের এখানে পরিশোধন সম্ভব নয়। তাই রাশিয়া থেকে ক্রুড তেল আমদানির সুযোগ পেলেও তা ব্যবহার করার সুযোগ নেই।

দেশে ক্রুড তেল পরিশোধন করে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড। তাদের রাশিয়া ক্রুড তেল পরিশোধনের ক্ষমতা নেই।

সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে গ্যাস। স্পটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এত বেশি দামে গ্যাস কিনে আমাদের এখন পোষাচ্ছে না। জ্বালানি নিয়ে আমরা সব জায়গায়ই চেষ্টা করছি। যাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি আছে, তারা যেন স্পট দামের কমে আবারও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে আমাদের জ্বালানি দেয়, সেই চেষ্টা করছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বৈশ্বিকভাবে জ্বালানির উচ্চ মূল্যের কারণে সংকট তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এ কারণে দেশে বিদ্যুতের সমস্যাও বেড়েছে। এ অবস্থায় অর্থনীতিতে আগামী ছয় মাসের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করা।

অনুষ্ঠানে ওক্যাবের আহ্বায়ক কাদির কল্লোল, সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম, সদস্য জুলহাস আলম, শফিকুল আলম, সিরাজুল ইসলাম কাদির, ফরিদ হোসেন, পারভিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ডলারের বিপরীতে বিকল্প মুদ্রায় রাশিয়া থেকে তেল আমদানি সম্ভব নয়। কারণ, বিশাল অংকের রাশিয়ান মুদ্রা রুবল বাংলাদেশের পক্ষে জোগান দেওয়া অসম্ভব। তাছাড়া নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারেও রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা যাবে না। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই কম দামে অন্য কোনো দেশ থেকে তেল আমদানি করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।

ওই বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আমরা জানতে চেয়েছি, রাশিয়া থেকে কোন পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আর কোন পণ্যে নিষেধাজ্ঞা নেই। জানতে পারলাম, জ্বালানি তেলের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তেল আমদানি করতে পারব না।

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি পর্যালোচনা করতে ১৬ আগস্ট একনেক সভায় নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রুবলের সঙ্গে টাকার বিনিময়ের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করা যায় কি না সেই উপায় খুঁজে দেখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু