কুয়েতে কী ঘটছে সে বিষয়ে ঢাকা থেকে বারবার জানতে চাওয়া হলেও কুয়েত মিশন থেকে কোনও তথ্য নেই বলে জানানো হয়েছে। ওই দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম পাঁচ বছর ধরে সেখানে কর্মরত থাকলেও কুয়েত সরকার বা অন্য জায়গা থেকে কোনও তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। এদিকে বিদেশের মাটিতে একজন সাংসদ আটকের ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘কুয়েতে আমাদের রাষ্ট্রদূত এখনও অফিসিয়ালি কোনও তথ্য দেননি। আমরা জানতে চাইছি সত্য ঘটনা কী এবং সরকারি ভার্সনটা কী? জানার পরে আমরা এটি ভেরিফাই করবো এবং আমাদের আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
ঢাকা কুয়েতের সংবাদপত্র থেকে সব তথ্য পাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত আমাদের বলেছেন তারা প্রথমেই নোট ভার্বাল পাঠিয়েছেন, কিন্তু লকডাউন চলায় কেউ রিসিভও করে না, কথাও বলে না। কুয়েত এখনও কোনও উত্তর দেয়নি।’ কুয়েতে দূতাবাসের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখানে কিছুটা দুর্বলতা আছে।’ দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কুয়েতে নতুন রাষ্ট্রদূত খুব শিগগিরই যাচ্ছেন।’
মন্ত্রী বলেন, তবে আমরা রাষ্ট্রদূতকে স্ট্যান্ডিং অর্ডারে বলেছি বিদেশে কোনও বাংলাদেশি এ ধরনের অবস্থায় পড়লে আমরা কনস্যুলার সেবা দেই। ওনারা যদি কনস্যুলার সেবা চান তবে আমরা সেটি দেবো। এরমধ্যে রয়েছে আমাদের মিশনের লোকেরা আটককৃত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করবেন, আইনজীবী দেওয়া ইত্যাদি। মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূত আমাদের জানিয়েছেন আটককৃত ব্যক্তির খুব ভালো আইনজীবী আছে এবং মনে হয় ওনারা এগুলো চাইবে না।
বাংলাদেশের একজনে এমপি আটকের ঘটনা দেশের জন্য অসম্মানজনক জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি দেশের জন্য অসম্মানজনক। স্বাভাবিকভাবে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা, খুবই হতাশাজনক। এটি নিয়ে কুয়েতে অনেক আলোচনা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হওয়া উচিত যে পরিক্ষিত লোক ছাড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা ঠিক না বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে দুদক তাদের মতো করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য ও অর্থপাচার সংক্রান্ত অপরাধে পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে উঠে আসে কীভাবে তিনি মানুষকে প্রতারিত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং এই কাজে তাকে কুয়েতের প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তারা সহায়তা করেছে ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য সুযোগের জন্য।
এখন পর্যন্ত তদন্তে বের হয়ে এসেছে পাপুল প্রতি বছর বিভিন্ন ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য খরচ বাদে প্রায় ৬০ কোটি টাকা নেট লাভ করতেন। এছাড়া পাপুল এবং তার কোম্পানির প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ ফ্রিজ করার জন্য ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছে পাবলিক প্রসিকিউটর।