সংশ্লিষ্টরা জানান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের বড় অংশই করেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শ্রমিক, রিকশাচালক, বাস-ট্রাকের শ্রমিক, ফুটপাতের দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষ এ মাধ্যমে বেশি লেনদেন করেন। তবে গত এপ্রিলে অনেকের আয় প্রায় বন্ধ ছিল। যার প্রভাবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন ব্যাপকভাবে কমেছে। যদিও অনেকের ধারণা ছিল, সশরীরে না গিয়ে কেনাকাটার বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন কারণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, করোনার কারণে সাধারণ ছুটি শুরুর পর নিম্ন আয়ের মানুষের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আয় ছিল না। অনেকে নগদ টাকা নিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিল। যে কারণে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন কমেছে। তবে গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রণোদনার টাকা বিতরণ, সরকারি অনুদানের টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অনেকে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। যে কারণে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি মেনে বর্তমানে ১৫টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। তার মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের মাধ্যমে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সেবা ‘রকেট’। এ ছাড়া ডাক বিভাগের ‘নগদ’ নিজেদের মতো করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। যদিও সম্প্রতি নগদকে অন্তর্বর্তীকালীন সেবার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই বিবরণীতে নগদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত নেই।
বংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে ক্যাশ-ইন ও ক্যাশ-আউট কমেছে ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। এপ্রিলে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে ৯৬৮ কোটি টাকা হয়েছে। আগের মাসে দৈনিক লেনদেন ছিল এক হাজার ২৮৩ কোটি টাকা।
সব ব্যাংক মিলে সারাদেশে বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার এজেন্ট রয়েছে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ২৬৫ জন। আর এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৮ কোটি ৫১ লাখ গ্রাহক। এর মধ্যে এপ্রিলে সচল ছিল ২ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার অ্যাকাউন্ট। এর আগের মাসে সচল অ্যাকাউন্ট ছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ ৪৫ হাজার।