বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি চিহ্নিত হওয়া নতুন এই ভাইরাসটি শূকর বহন করে। মানুষের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন এই ফ্লু ভাইরাসের নামকরণ হয়েছে জি৪ইএএইচ১এন১। এটি মানুষের শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে বেড়ে উঠতে এবং বিস্তার ঘটাতে পারে। যারা চীনে শূকর এবং কসাইখানায় কাজ করছেন তাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।। বর্তমানে যেসব টিকা বাজারে রয়েছে সেগুলো প্রয়োগ করে এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।
ভাইরাসটির উপসর্গ কী?
গবেষকরা বলছেন, এই ভাইরাসটি ইনফ্লুয়েঞ্জা গোত্রেরই৷ জি৪ জেনোটাইপ নামে জেনেটিক মেটেরিয়াল রয়েছে৷ ২০১৬ সাল থেকে শুয়োরের মধ্যে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস৷ করোনার মতোই জি৪ ভাইরাসও শ্বাসনালিতে সংক্রমণ ঘটায়৷ দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে৷ এই ভাইরাস আক্রান্তের উপসর্গ হল, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, কাশি এবং শরীরের ওজন হঠাত্ অনেকটা কমে যাওয়া৷
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দুঃখের বিষয় জি৪ ভাইরাসের কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষের দেহে নেই৷ তাই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখার পরামর্শ দিচ্ছে৷ এর বিরুদ্ধে কোনো হার্ড ইমিউনিটিও নেই এখনো পর্যন্ত৷
সোয়াইন ইন্ডাস্ট্রিতে (শুয়োরের ব্যবসা) কাজ করা মানুষের মাঝে ১০.৪ শতাংশের রক্তে জি৪ পজিটিভ পাওয়া গেছে৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের বয়সের অংশগ্রহনকারীদের রক্তে ভাইরাসের পজিটিভ হার প্রায় ২০ শতাংশ। এটা ইঙ্গিত দেয় যে জি৪ স্ট্রেইন মানুষের সংক্রামকতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণা বলছে, এই ভাইরাসটি মারাত্মক৷ ভবিষ্যতে মহামারির সৃষ্টি করতে পারে এই ভাইরাস৷ বিশেষ করে যারা পর্ক বা শুয়োরের মাংস খান, তাদের থেকেই ছড়াতে পারে সংক্রমণ৷ এই ভাইরাস শুয়োর থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত পর্যন্ত হতে পারে৷
চীনে নতুন যে ফ্লু ভাইরাস পাওয়া গেছে তার সঙ্গে ২০০৯ সালে মেক্সিকো থেকে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লুর মিল রয়েছে। এখন পর্যন্ত এটা বড় কোনো হুমকি তৈরি করেনি। কিন্তু ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণা করা যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত প্রফেসর কিন-চো চ্যাং এবং তার সহকর্মীরা বলছেন, এর ওপর নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রফেসর কিন-চো চ্যাং বলেছেন, এই মুহূর্তে আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছি এবং সেটাই সঠিক। কিন্তু আমাদের অবশ্যই নতুন ভাইরাসের সম্ভাব্য বিপদের ওপর থেকে চোখ সরানো চলবে না।নতুন এই ভাইরাসটি এখনই সমস্যা তৈরি করছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত হবে না।
২০২০ সালটিকে অনেকেই বলছেন, ভাইরাস ও মহামারির বছর৷ তাই কভিড-১৯ থেকে শিক্ষা নিয়ে জি৪ ভাইরাস সম্পর্কে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা৷
সূত্র- নিউজ ১৮