কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, মাহবুবুল আলম, রিপন কুমার দেবনাথ, পরিচালক মো. আবুল কালাম এবং অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিএসইসির ৮৩৬তম কমিশন সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়। কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উন্নয়নে সার্বিক বিষয় নিয়ে কাজ করবে এই কমিটি।
ইতোমধ্যে বিএসইসির কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত কমিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সিএসইর কাজের অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই)। এ ধরনের এক্সচেঞ্জ গঠনের বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের (এমসিএক্স) সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে সিএসই। এরই ধারাবাহিকতায় কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সিএসইর কাজের অগ্রগতি সম্প্রতি জানতে চেয়েছে বিএসইসি। একইসঙ্গে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত মাসিক ভিত্তিক অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করতেও সিএসইকে বলেছে কমিশন।
সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে সিএসইর কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার অগ্রগতি সংক্রান্ত বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের গত ১২ এপ্রিল সিএসই এবং এমসিএক্স অব ইন্ডিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অনুচ্ছেদ ৪(সি) অনুসারে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত সকল মাইলফলক সম্পন্ন করার জন্য ৯ মাসের একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সিএসইর বিগত ৪ মাসের কাজের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এছাড়া এখন থেকে মাস শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মাসিক ভিত্তিতে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হলো।
সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনের বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় এ বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এমসিএক্স পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নেয় সিএসই। তবে বিভিন্ন কারণে সিএসইর এমসিএক্স পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। তবে আলোচনার মাধ্যমে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনের বিষয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আগামী অক্টোবরের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে সিএসই ভারতের এমসিএক্স পরিদর্শন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে, সিএসইর পক্ষ থেকে পাট, তুলা, স্বর্ণ, আলু, পেঁয়াজ, চা ইত্যাদি পণ্যের মধ্য থেকে এক বা একাধিক পণ্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কেনাবেচার করা যায় কি না সে বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। একটি কেন্দ্রীভূত বাজারের সঙ্গে পণ্য ব্যবসা ও ভোক্তাদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংগঠিত ও স্বচ্ছ বাজার সিন্ডিকেট ও দামের কারসাজি কমাতে এ ধরনের এক্সচেঞ্জ মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
প্রসঙ্গত, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হলো এমন একটি লেনদেন ব্যবস্থা, যেখানে বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা করা হয়ে থাকে। কাগুজে বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে এই কেনাবেচা নিষ্পত্তি হবে। মূল এ লেনদেনকৃত পণ্যটি কোনো গুদামে বা মাঠে থাকে। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর এটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বা হস্তান্তর হয়। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ অনুযায়ী, কৃষিপণ্য, মাছ, গবাদিপশু, খনিজ ও জ্বালানি পণ্য, বনজ সম্পদসহ উৎপাদিত যেকোনো পণ্যই কমোডিটি এক্সচেঞ্জের আওতায় কেনাবেচা করা যাবে। এসব পণ্য কেনাবেচা বা লেনদেনের জন্য যে প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে, সেটাই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নামে পরিচিত হবে।