পরিস্থিতিকে আরো সংকটাপন্ন করে তুলেছে উত্তরাঞ্চলের বন্যা। গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে কোনো কোনো স্থানে। সব মিলিয়ে দেশের সবখানেই এখন মারাত্মক দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন অনেক খামারি। সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
চট্টগ্রাম: করোনা সংক্রমণের দিক থেকে এ মুহূর্তে ঢাকার পরই সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে রয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। চলমান মহামারী পরিস্থিতিতে আসন্ন কোরবানিতে এখানে গরুর হাট বসলেও অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও মহামারীর কারণে ক্রেতা পাওয়া যাবে কিনা, সে বিষয় নিয়েও বড় ধরনের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছেন এখানকার খামারিরা।
কোরবানির পশু পালনের জন্য প্রসিদ্ধ চট্টগ্রামের শঙ্খ তীরবর্তী এলাকা সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও বাঁশখালী। এ এলাকার প্রতিটি বাড়িতেই স্থানীয় জাত চিটাগং রেড ক্যাটলসহ নানা জাতের গরু পালন হয়। এগুলোর বেশির ভাগই পালন করা হয় কোরবানির সময় বিক্রির উদ্দেশ্যে। তবে এবার করোনা সংকটের কারণে গরুর বাজার ও চাহিদা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন এ অঞ্চলসহ চট্টগ্রামের কৃষক ও খামারিরা।
সাতকানিয়ার শঙ্খ তীরবর্তী গ্রাম দক্ষিণ চরতি। এ গ্রামের কৃষক জেয়াবুল হোসেনের কোরবানির গরু রয়েছে পাঁচটি। গত বছর কোরবানির পর সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে গরুগুলো কিনে লালন-পালন করছেন তিনি। প্রত্যাশা ছিল এবার গরুগুলো কমপক্ষে ৮-১০ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতি বছরই কোরবানিকে ঘিরে পাঁচ-সাতটি গরু পালন করি। এ এলাকার প্রতিটি বাড়িতেই কোরবানির গরু পালন হয়। তবে এবার কোরবানির গরুর চাহিদা নিয়ে আমাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আমাদের এখানকার গরুর ভালো কদর রয়েছে বাজারে। কিন্তু করোনার কারণে মানুষ এখন শহর ছেড়ে গ্রামে চলে আসছে। প্রবাসীরাও দেশে ফিরছে। চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় অনেক মানুষ বেকার। তাহলে এসব গরু কিনবে কে?
একই এলাকার গরুর খামারি আব্দুল মোমেন। তার দুই খামারে গরুর সংখ্যা ১৪০। খামার দুটিতে চিটাগং রেড ক্যাটলসহ অন্যান্য দেশী ও নেপালিসহ বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। খামারের উদ্যোক্তা আব্দুল মোমেন বলেন, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোরবানির গরু লালন-পালন করছি। চট্টগ্রামের বাজারে এ অঞ্চলের গরুর ভালো চাহিদা থাকায় প্রতি বছর লাভও ভালো হয়। তাই গরু পালনকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে বছর বছর এর পরিধি বাড়িয়েছি। তবে এর সঙ্গে বছর বছর গরু লালন-পালনের খরচও বেড়েছে।
তিনি বলেন, জীবনের সব আয় দিয়ে গড়ে তুলেছি এ খামার। এ গরুগুলোই আমার সারা জীবনের আয়ের টাকা দিয়ে কেনা। সঙ্গে কিছু ব্যাংকঋণও রয়েছে। কিন্তু এবারে গরুর বাজার নিয়ে খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। এর মধ্যে প্রথম কথা হচ্ছে বাজার কেমন হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে কি গরুর বাজার সম্ভব? তাছাড়া করোনার কারণে মানুষের আর্থিক সংকটে চাহিদা তো কমবে।
আগের বছরগুলোর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানিয়েছে, এবার চট্টগ্রামে কোরবানিযোগ্য পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ৭ লাখ ৩১ হাজার। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে সরবরাহযোগ্য পশু রয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি। এসব পশুর মধ্যে গরু রয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭২টি। এছাড়া ৫৭ হাজার ১৩১টি মহিষ, ১ লাখ ৬৭ হাজার ২১০টি ছাগল ও ভেড়া এবং ১০৯টি অন্যান্য কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রিয়াজুল হক বলেন, করোনার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবার কোরবানির পশু বিক্রি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর পরও সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কোরবানির পশু বিক্রির ব্যবস্থা করতে আমরা কাজ করছি। কারণ কৃষক ও খামারির জীবিকার চেয়ে করোনার সংক্রমণ ও মানুষের জীবনকে এখন গুরুত্ব দিতে হচ্ছে বেশি।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম নগরীতে অনুমোদন পেয়েছে তিনটি স্থায়ীসহ মোট সাতটি গরুর হাট। কয়েকদিনের মধ্যে শুরু হবে এসব হাটে গরু বেচাকেনা। প্রয়োজন বিবেচনায় অনুমোদন পেতে পারে আরো কয়েকটি অস্থায়ী গরুর হাট। যদিও সংক্রমণ ঠেকাতে এ মুহূর্তে গরুর হাট থেকে সরে আসার কথা বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
রংপুর বিভাগ: করোনার হানায় গোটা রংপুর বিভাগের খামারিরাই বড় ধরনের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছেন। বিশেষ করে যেসব খামারি আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে সারা বছর ধরে গরু লালন-পালন ও মোটাতাজাকরণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের মধ্যেই এখন শঙ্কার মাত্রা সবচেয়ে বেশি। ন্যায্য দামে পশু বিক্রি থেকে শুরু করে চাহিদা ও ক্রেতা পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে।
রংপুর বিভাগের খামারিদের জন্য এ সংকটকে আরো ঘনীভূত করে তুলেছে চলমান বন্যা পরিস্থিতি ও গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ। বন্যাকবলিত কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুমকার চরের বাসিন্দা মঈনুল হক জানান, মোট চারটি গরু পালন করছেন তিনি, এর মধ্যে দুটি এবার কোরবানির হাটে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে এবার গরু বিক্রি হবে কিনা, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে বড় ধরনের সংশয়। এর মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘার মতো দেখা দিয়েছে বন্যা। ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত ঝুমকার চরের চারণভূমি প্লাবিত হওয়ায় বর্তমানে গরুগুলোর খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। ঈদের আগে পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে এ এলাকায় পাইকাররা আসবেন কিনা, সে বিষয় নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের সংশয়।
রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, মে মাস পর্যন্ত জরিপে হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের আট জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৫৪। এছাড়াও ঈদের মধ্যে কোরবানিযোগ্য হয়ে উঠবে আরো ২ লাখ ২ হাজার ৩২৭টি। সে হিসেবে আট জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৮১টি। এ বছর বিভাগে গত বছর বিক্রি হওয়া পশুর সংখ্যার তুলনায় অতিরিক্ত ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৬৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে।
বিভাগের জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে প্রতি বছরই এ সময় গরু কেনার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আগত পাইকাররা ভিড় করে থাকেন। কিন্তু এবার সে দৃশ্য একেবারেই চোখে পড়ছে না। রংপুর জেলার অন্যতম বড় হাট শঠিবাড়ি হাটে ঈদের অনেক আগে বাইরের পাইকাররা এসে ভিড় করে থাকেন। কিন্তু এবার চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। হাট ইজারাদারদের একজন মো. ফয়েজুল আলম রুবেল বলেন, তার আট বছরের ব্যবসায় এবারই প্রথম বাইরে থেকে আগত পাইকারদের ভিড় চোখে পড়ছে না তার। যদিও হাটে বিক্রির জন্য গরুর উপস্থিতি ভালো।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের আমবাড়িতে অবস্থিত অনিন্দ ডেইরি ফার্ম মূলত দুধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান হলেও খামারটি থেকে প্রতি বছর কোরবানির গরুও সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ফার্মের ম্যানেজার মো. মুকুল হোসেন বলেন, এ বছর ৬৫টি গরু বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। এর মধ্যে হাটে বেশকিছু গরু নিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হয়েছে। গত বছর যে আকৃতির ও মানের গরুর দাম ২ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, এবার সে আকৃতি ও মানের গরু কেউ দেড় লাখ টাকায়ও কিনতে চাচ্ছে না। অথচ, এসব গরুর একেকটির খাওয়া বাবদ প্রায় আট মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়া ফার্মের কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই।
তবে খামার থেকে সরাসরি এবং অনলাইন ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ক্রেতাদের গরু বিক্রি ও সরবরাহকারী বিক্রেতারা এখন পর্যন্ত তুলনামূলক ভালো অবস্থায় রয়েছে। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পৌরসভার বাঁশবাড়ি মহল্লার গরু খামারি মো. জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, সাত বছর ধরে খামার থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে গরু বিক্রি করছেন তিনি। কখনো হাটে গরু নিয়ে যাননি। গত বছর ২২৩টি বিভিন্ন সাইজের গরু বিক্রি করেছেন। এবারো ১৭০টি গরু ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে রেখেছেন। এরই মধ্যে ১১৩টি গরু বিক্রি হয়েছে। তার এলাকায় অনেক খামারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গরু বিক্রি করছেন। এক্ষেত্রে আগ্রহী ক্রেতারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গরুর ছবি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, তাদের এলাকায় দুয়েক জায়গায় গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা দিয়েছে। যদি তা ছড়িয়ে না পড়ে, তাহলে এবার গরু বিক্রি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. হাবিবুল হক বলেন, করোনা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুরক্ষা দিতে আমরা এবার কোরবানিতে খামারিদের হাটের পরিবর্তে অনলাইনে প্রচারের মাধ্যমে বিক্রিতে উৎসাহিত করছি।
যশোর: আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে কোরবানিযোগ্য পশু লালন-পালন করেছেন যশোরের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক খামারি। চলমান নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি মহাদুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে তাদের সবাইকেই।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোরে এবার কোরবানি উপলক্ষে ১০ হাজার ২৮২টি খামারে ৬৭ হাজার ৯৭৫টি গরু-ছাগল মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৩৪ হাজার ৯৯৭টি ও ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৩২ হাজার ৯৭৮টি। এবার জেলায় ৬০ হাজার কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা রয়েছে। সে হিসেবে এখানে কোরবানিযোগ্য অতিরিক্ত পশু রয়েছে প্রায় আট হাজার।
জানা গিয়েছে, জেলার অধিকাংশ খামারিই এবার নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কোরবানির পশু পালন করছেন। এবার ভারত থেকে গরু আমদানি না হলেও করোনার ছোবল তাদের মধ্যে বড় ধরনের আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী পশু বিক্রি করতে না পারলে অনেক খামারির আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
যশোর সদরের সুলতানপুর গ্রামের মো. নূরুন্নবী এবারের কোরবানিকে সামনে রেখে মোটাতাজাকরণ করেছেন ১০টি গরু। প্রতিদিন গরুর খাবারের পেছনে তার ব্যয় হয়েছে গড়ে ২ হাজার টাকা করে। হামিদপুর গ্রামের আসাদ আসাদুজ্জামান মোটাতাজাকরণ করেছেন পাঁচটি দেশী গরু। এসব গরুর খাবারের পেছনে দৈনিক তার ব্যয় হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এ দুই খামারিরই প্রত্যাশা ছিল, আসন্ন কোরবানিতে ভালো দামে গরু বিক্রি করবেন। কিন্তু করোনার কারণে বিষয়টি নিয়ে এখন বড় ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারাও। এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার শফিউল আলম বলেন, এবারের কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে খামারিদের মতো আমরাও করোনার প্রভাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। যদি খামারিরা লোকসানের শিকার হন, তাহলে আগামীতে তাদের গরু-ছাগল লালন-পালনে আগ্রহ কমেও যেতে পারে।
খুলনা: কোরবানির হাটে পশুর প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন খুলনার খামারিরাও। দুশ্চিন্তার মধ্যে হাটের অপেক্ষায় না থেকে আগাম গরু বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক খামারি ও পশু ব্যবসায়ী। তাদের অনেকেই বলছেন, পরিস্থিতি বুঝেই তারা সিদ্ধান্ত নিতে চান। দাম পেলেই কেবল গরু হাটে তুলবেন। অন্যথায় লোকসান দিয়ে তারা গরু বিক্রি করবেন না। যে কারণে সঠিক দামে আগে থেকেই বিক্রির চেষ্টা করছেন।
এ অবস্থায় অনলাইনেই কোরবানির পশু কেনাবেচায় খামারি ও ক্রেতাদের উৎসাহ দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। এরই মধ্যে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং খুলনা সিটি করপোরেশন ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এখানে ‘অনলাইন কোরবানি হাট’ নামে একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে ওয়েবসাইটও।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, খুলনায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ৪৫ হাজার ১৪৮টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৪০ হাজার ৯৬৮টি। ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৪ হাজার ১৮০টি।
দিঘলিয়া উপজেলা সদরের মরহুম খান মোজাফ্ফর হোসেন ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী এরশাদ খান সবুজ জানান, তার খামারে ৮০টি গরু এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু করোনা সংকটকালীন পরিস্থিতিতে খুব একটা লাভ না হলেও ছেড়ে দেবেন তিনি। কিন্তু লোকসানে গরু বিক্রি করবেন না।
বটিয়াঘাটা উপজেলার খামারি সুমন হোসেন বলেন, অনেকেই অনলাইনে গরু ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু খামারিরা হাটে গরু নিয়ে বিক্রি না করতে পারলে সন্তুষ্ট হন না।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এসএম আউয়াল হক বলেন, এবার করোনার কারণে পশুরহাটে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা হবে। এছাড়া অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে পশু বিক্রি নিয়ে খামারিদের খুব বেশি হতাশ হওয়ার কিছু নেই।সুত্র:বনিকবার্তা