দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তি: মার্চেন্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএসইসি

দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তি: মার্চেন্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএসইসি

তুলনামূলক দুর্বল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করেছে এমন ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানগুলোর (মার্চেন্ট ব্যাংক) বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।


সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ৪টি মার্চেন্ট ব্যাংককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির ক্যাপিটাল ইস্যু ডিপার্টমেন্ট থেকে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

শেয়ারবাজারে যখন কোন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে চায়, তখন ইস্যু ম্যানেজার বা মার্চেন্ট ব্যাংক ওই কোম্পানির পক্ষে প্রশংসাপত্র দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর্মক্ষমতা কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই খারাপ হলে ইস্যু ম্যানেজাররাও দায়ী।

নোটিশে বিএসইসি বলছে, যে ইস্যু ম্যানেজাররা গত কয়েক বছরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পরিচালনা করেছেন এবং প্রসপেক্টাসে যথাযথ পরিশ্রমের প্রশংসাপত্র সরবরাহ করেছেন। তারা ঘোষণা করেছে প্রসপেক্টাসে দেওয়া সব তথ্য সঠিক এবং বিনিয়োগকারীদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করার জন্য পর্যাপ্ত। কিন্তু কোম্পানিগুলি তাদের তালিকাভুক্তির পর থেকে ভাল করছে না।

বিএসইসি ইস্যু ব্যবস্থাপকদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন কমিশন তাদের ইস্যু ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাতিল করবে না।

ডিএসই দেওয়া তথ্য মতে, গত ১০ বছরে তালিকাভুক্ত অন্তত পাঁচটি কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে ব্যর্থ হওয়ায় সেগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। কোম্পানিগুলো হল: সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, এমারেল্ড ওয়েল, ফ্যামিলি টেক্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং জেনারেশন নেক্সট। এছাড়াও তালিকাভুক্তির পর অনেক কোম্পানির মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

তবে বিএসইসির এমন সিদ্ধান্তে আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছেন মার্চেন্ট ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য এর যৌক্তিক কারণও তুলে ধরেছেন তারা। একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী অর্থসংবাদকে জানান, বিএসইসি থেকে দেওয়া চিঠিই তো সঠিক নয়। কারণ চিঠি দেওয়া হয়েছে ক্যাপিটাল ইস্যু ডিপার্টমেন্ট থেকে। এই ডিপার্টমেন্ট লাইসেন্স বাতিল করতে চিঠি দেওয়ার কোন এখতিয়ার নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোশিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডন্ট মো. সাইদুর রহমান অর্থসংবাদকে বলেন, ইস্যু ম্যানেজার কোম্পানিকে আইপিওতে আনার জন্য যদি কোন ডকুমেন্টে ভুল করে থাকে সেটার জন্য জবাবদিহির আওতায় আসতে পারে। কিন্তু ইস্যু অনুমোদনের পর কোন কোম্পানির ভিতরে প্রবেশেরই তো এখতিয়ার নেই। সেখানে একটা কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ব্যবসা খারাপ হতে পারে বা মালিকপক্ষ চুরি করতে পারে, সেটার জন্য ইস্যু ম্যনেজার কেন দায়ী হবে?

বিএমবিএ প্রেসিডেন্টের মতে, কোম্পানি তালিকাভুক্তির ১০ বছর পর ব্যবসা খারাপ হতে পারে, ব্যবসার বিষয়ে তো ইস্যু ম্যানেজার কিছু করতে পারে না।

শেয়ারবাজারের একজন বিশ্লেষক বিএসইসির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। কমিশনের এ উদ্যোগকে তিনি প্রশংসনীয় বলছেন, কারণ ইস্যু ম্যানেজাররা একটি কোম্পানিকে ভালোভাবে জানেন, তাই তাদের সততা গুরুত্বপূর্ণ।

তবে তিনি বলেন, ইস্যু ম্যানেজারদের অতীতে জবাবদিহি করা হয়নি। তাদের তাদের আইপিওর জন্য দায়ী করা উচিত।

উল্লেখ্য, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৬৭টি মার্চেন্ট ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত