প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২) তিনি এসব কথা বলেন। ‘শুভ জন্মদিন তিমির হননের নেত্রী’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আব্দুর রহমান।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এর সঞ্চালনায় আলোয়নায় অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া, সাবেক তথ্য কমিশনার প্রফেসর সাদেকা হালিম, ড. উত্তম বড়ুয়া, ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক বিমান বড়ুয়া, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক শরীফ সাহাবউদ্দীন, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহবুববুর রহমান বাবু, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেন, ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামটা শুনলেই বোঝা যায় আমাদের কী করণীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারিবারিকভাবেই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বড় হয়েছেন। এর কারণ জানতে আগে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা তার কন্যার মধ্যে গ্রোথিত হয়েছে বলেই শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন। তিনি বলেন, এ দেশ স্বাধীন করেছে সব ধর্মের মানুষ। তাই ধর্মান্ধতার বিভ্রান্তি থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পাকিস্তানী পরাজিত শক্তির সীমাহীন উল্লাস দেখেছি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়েই শুধু খুনিরা ক্ষান্ত হয়নি, তারা জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করেছে। দেশকে নিয়ে গেছে অন্ধকারের দিকে। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশে ফিরে দূর করেছেন সেই অন্ধকার। তিনি শুধু দলের হালই ধরেননি, জাতিকে দিয়েছেন দিশা। দেশকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের পথে। বারবার প্রাণনাশের চেষ্টার পরও তিনি জমে যাননি।
তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি এখনো সক্রিয়। তারা দেশে ও দেশের বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা যেন গণতন্ত্রের পথ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিমির হননের নেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনা। প্রখ্যাত সাংবাদিক তোয়াব খানের একটি লেখায় শেখ হাসিনাকে তিমির হননের নেত্রী বলা হয়েছে। আমরা অনুমতি নিয়ে সেটি ব্যবহার করেছি। কারণ, এর সঙ্গে আমরা পুুরোপুরি একমত। শেখ হাসিনা শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে জাতিকে নেতৃত্ব দেননি, তিনি অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাওয়া থেকে একটি জাতিকে উদ্ধার করেছেন। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেখান থেকে তিনি দেশ, দেশের মানুষ এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি যদি ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের ভাঙ্গা তরীর হাল না ধরতেন তবে দেশের কী অবস্থা হত তা ভাবাও যায় না। শেখ হাসিনার জন্মদিনে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রীতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান ও তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
আসন্ন দুর্গা পূজা উদযাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গা পূজা পালন করেন। কিন্তু আবহমান কাল থেকেই এই উৎসবে যোগ দেন সব ধর্মবর্ণের মানুষ। এটি বাঙালির উৎসব। সবাই মিলে যেন শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব পালন করা যায়, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। কোনো অপশক্তি যেন আমাদের এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে। শিক্ষক, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, ছাত্রনেতাসহ আলোচনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।