অ্যাপল ব্র্যান্ডের নাম শুনলেই তো যে কোন মানুষ চমকে যায়। আর সেখানে চাকরি তো অনেক মানুষের জন্যে স্বপ্নের চেয়েও বেশী কিছু। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ প্রতিভাবান ব্যক্তি এ প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করেন। সম্প্রতি অ্যাপলের সিইও টিম কুক প্রকাশ করেছেন এক দুর্লভ সত্য, জানিয়েছেন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ৪টি দক্ষতা বা বৈশিষ্ট্য খোঁজেন তিনি।
অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফটের মতো বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি করতে কে না চায়? কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পাওয়া যে বেশ দুরূহ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ প্রতিভাবান ব্যক্তি এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করেন। সম্প্রতি অ্যাপলের সিইও টিম কুক প্রকাশ করেছেন এক দুর্লভ সত্য, জানিয়েছেন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ৪টি দক্ষতা বা বৈশিষ্ট্য খোঁজেন তিনি।
সম্প্রতি ইতালির ইউনিভার্সিটি অব নেপলস ফেডেরিকো টু থেকে উদ্ভাবন ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় সম্মানসূচক ডিগ্রিতে ভূষিত হয়েছেন ৬১ বছর বয়সী টিম কুক। অ্যাপলের সিইও মনে করেন একটি কোম্পানির সফলতা নির্ভর করে কোম্পানির নিজস্ব সংস্কৃতি ও কাদের নিয়োগ দিচ্ছে তার ওপর।
টিম কুক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে একদল মানুষ আছেন যারা পৃথিবীতে পরিবর্তন আনতে চান, মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করতে চান, তারা যেমন পৃথিবীতে এসেছেন, ভবিষ্যত প্রজন্মকে তার চেয়ে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে চান। এটা এমন একটা অনুভূতি যার কারণে মানুষ তার সেরাটা দিতে চায় কর্মস্থলে। আর এর প্রমাণ আমি বারবার পেয়েছি এবং এর ফলাফলও অবিশ্বাস্য!"
চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে অ্যাপলের সিইও জানান, অ্যাপলের কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে তিনি যে চারটি বৈশিষ্ট্য খোঁজেন সেগুলো হলো:
সহযোগিতার মনোভাব-
সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে পারার ক্ষমতাকে প্রাধান্য দেন টিম কুক। তিনি বলেন, "আমার বিশ্বাস, কর্মক্ষেত্রে একেকজন কর্মীর আলাদা আলাদা অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বটে, কিন্তু দুজন যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী একসঙ্গে কাজ করলে অসাধারণ ফলাফল পাওয়া যায় এবং ছোট ছোট টিমও অবিশ্বাস্য কাজ দেখাতে পারে।"
অ্যাপলের সিইও আরও উল্লেখ করেন, সহকর্মীদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব ও মিলেমিশে কাজ করার যে প্রক্রিয়া, তার কারণেই অ্যাপল আজ সফলতার চূড়ায় পৌছেছে এবং গ্রাহকদের জন্য নতুন নতুন পণ্য তৈরি করতে পেরেছে।
"আমরা দেখি যে প্রার্থীদের মধ্যে মিলেমিশে কাজ করার সক্ষমতা আছে কিনা- সেই অনুভূতিটা থাকতে হবে যে আমি যদি আমার আইডিয়া তোমার সঙ্গে শেয়ার করি, তাহলে আইডিয়াটা আরও প্রস্ফুটিত হবে এবং শক্তিশালী হবে।"
সৃজনশীলতা-
আরেকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য যা অ্যাপল তাদের কর্মীদের মধ্যে দেখতে চায় তা অবশ্যই 'সৃজনশীলতা'। কুক বলেন, "আমরা এমন মানুষদের খুঁজি যারা ভিন্নভাবে চিন্তা করতে জানেন, যারা সমস্যার দিকে তাকিয়ে আগে ভাবেন না যে এতদিন যাবত সেটা কিভাবে সমাধান করা হয়েছে। আমরা এমন কর্মী চাই যারা সমস্যার চারদিকে ঘুরবেন, সেটাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন এবং নিজেদের সৃজনশীলতা দিয়ে সমস্যা সমাধান করবেন।
কৌতূহল-
অনেকটা বইয়ের পাতার অনুপ্রেরণাদায়ক উক্তির মতো শোনালেও এটাই সত্য যে কৌতূহল আপনাকে অনেকদূর নিয়ে যেতে পারে। আর এক্ষেত্রে… আপনাকে নিয়ে যেতে পারে অ্যাপল-এর কাছে!
টিম কুক জানান, অ্যাপল একজন প্রার্থীর কৌতূহলবোধকেও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরে এবং দেখতে চায় তার মধ্যে জ্ঞানের ক্ষুধা আছে কিনা।
টিম কুক বলেন- "কৌতূহলবোধ এমন একটি বিষয় যার কারণে মানুষ অনেক প্রশ্ন করতে শেখে, সেটা বুদ্ধিমান প্রশ্ন হোক বা বোকা বোকা। যখন কেউ প্রশ্ন করতে শুরু করে- যেমনটা বাচ্চারা করে, সেটা উত্তরদাতাকে গভীরভাবে ভাবতে শেখায় যে উত্তরটা কী হওয়া উচিত। আর আমরা প্রার্থীদের মধ্যে এই সহজাত কৌতূহলটাই খুঁজি।"
দক্ষতা-
অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো ছাড়াও প্রার্থীদের মধ্যে যে বিষয়টি খোঁজে অ্যাপল, তা হলো দক্ষতা। "আমরা যদি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন সংক্রান্ত কিছু করতে চাই, তাহলে আমরা এমন একজনকেই খুঁজবো যার এ বিষয় কলেজ পর্যায় থেকে দক্ষতা আছে বা আগে কোথাও এ নিয়ে কাজ করেছে", বলেন টিম কুক।
সবশেষে অ্যাপলের সিইওর ভাষ্যে- "এই চারটি বিষয় আমরা প্রার্থীদের মধ্যে দেখতে চাই, আর এই ফর্মুলাটা আমাদের জন্য দারুণভাবে কাজ করেছে।"
অর্থাৎ উল্লিখিত বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতাসমূহ থাকলে আপনিও অ্যাপলে আবেদন করতে পারবেন এবং বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েও যেতে পারেন!