নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় হাতের সেলাইয়ে তৈরি হয় বিশেষ এক ধরনের টুপি। এ টুপি ওমানের জাতীয় টুপি হিসেবে পরিচিত। এসব টুপি এখন পাকিস্তান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কুয়েত, কাতার, বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। ওমানের জাতীয় টুপি নামে পরিচিত বিশেষ এই টুপি তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার নারী কারিগর।
সারা বছর টুপি সেলাইয়ের টুকটাক কাজ হলেও রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সুঁই-সুতা দিয়ে তৈরি চমৎকার এসব টুপির চাহিদাও ব্যাপক। এই টুপির কারিগর মূলত গ্রামীণ নারীরা। টুপি সেলাইয়ের কাজ করে এখন অনেকের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে। সংসারে কাজের পাশাপাশি টুপি সেলাইয়ের কাজকেই তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা জানান বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার টুপি রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, গত একযুগ আগে ফেনী জেলা থেকে প্রথম জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ব্যবসায়ীরা টুপি নিয়ে আসে। তাই বলা যায় মহাদেবপুর উপজেলায় এ টুপির উৎপত্তি। এরপর নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে টুপি সেলাইয়ের কাজ শুরু হয়। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন জেলার ১১টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এ টুপি তৈরির কাজ। টুপির সাথে প্রায় ২০০ জন ব্যবসায়ী জড়িত। আর টুপি তৈরির সাথে প্রায় ৫০ হাজার নারী কারিগর জড়িত। এ কাজ করে গ্রামীণ নারীরা বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছে।
এক থান কাপড় থেকে প্রকারভেদে ৯০ থেকে ১০০টি টুপি তৈরি হয়। এরপর সাইজ করা টুপির কাপড়ে নকশা করা পলিথিন রেখে তেল ও ব্লু (নীল রং) দিয়ে ছাপ দেয়া হয়। বিভিন্ন ফুলের নকশা করা হয়। ছাপ দেওয়া নকশার ওপর মেশিন দিয়ে সেলাই করা হয়। এরপর এ টুপিটি বিভিন্ন কারিগরদের কাছে হাতের কাজ করতে দেওয়া হয়।
নকশার ওপর সুঁই এর সাহায্যে বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে ফুল তোলা হয়। সুঁইয়ের ফোঁড়ে নান্দনিক নকশা ফুটে উঠে একেকটা কাপড়ে। বিশেষ কায়দায় সেলাই ও ভাঁজ করে এই কাপড় দিয়ে বানানো হয় টুপি। সংসারে কাজের পাশাপাশি সারা বছরই টুপি তৈরি হয়। পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও টুপি তৈরির কাজ করে থাকে।