নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্টে আমানত বেড়েছে ৮৬৪ কোটি টাকা

নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্টে আমানত বেড়েছে ৮৬৪ কোটি টাকা

দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্ট (এনএফএ)। এটি মূলত একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট যেখানে মাসে মাসে কোনো ন্যূনতম ব্যালেন্সের প্রয়োজন হয় না। তবে পণ্যের দাম বাড়লেও এক বছরের ব্যবধানে নো-ফ্রিল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণ বেড়েছে ৮৬৪ কোটি টাকা।





কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ত্রৈমাসিক তথ্য (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনুযায়ী, এনএফএ অ্যাকাউন্টগুলোতে সেপ্টেম্বর শেষে মোট ৩,৪৩৬ কোটি টাকা জমা ছিল, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২,৫৭২ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী আমানত বেড়েছে ৮৬৪ কোটি টাকা।





প্রাপ্ত ত্রৈমাসিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১০/৫০/১০০ টাকার নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে কৃষকদের অ্যাকাউন্ট সবচেয়ে বেশি; এর মাধ্যমেই কৃষি খাতের জন্য নিয়মিতভাবে সরকারি ভর্তুকি বিতরণ করা হয়। সেপ্টেম্বরের শেষে, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে মোট জমা হয়েছে ৬০২ কোটি টাকা, যা আগের ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল-জুন) তুলনায় ৫.৭৯% বেশি এবং ২০২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় ২৪.৪৫% বেশি।





তবে অত্যন্ত দরিদ্রদের এনএফএ-তে আমানত রাখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক বৃদ্ধি দেখা গেছে। অত্যন্ত দরিদ্রদের অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ আগের ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল-জুন) থেকে ১.৯৮% এবং ২০২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে ৮.৩৩% কমেছে।





বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধাদের নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্টে আমানত রয়েছে ৯৫৬ কোটি টাকা, যেখানে অত্যন্ত দরিদ্রদের ১৯৭ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধাভোগীদের আমানতে রয়েছে ৮৬১ কোটি টাকা এবং পোশাক শ্রমিকদের আমানতে ২৪৭ কোটি টাকা।





গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রয়াসে সরকার ২০০-৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প থেকে কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদান করেছে।





সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে পূর্ববর্তী প্রান্তিকের তুলনায় ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই বিভাগে ঋণ বিতরণ ১০.১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।





এসব অ্যাকাউন্টে সরকারি সহায়তা ও প্রণোদনাসহ বিভিন্ন অনুদান যোগ করা হয় এবং আমানত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।





মেজবাউল হক আরও বলেন, "অনেকে এই টাকা সঞ্চয় করে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তা তুলে নেয়। পাশাপাশি, অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে এই প্রান্তিক মানুষদের ব্যাংকিং চ্যানেলে আনার জন্য অন্যান্য প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।"





ব্যাংকগুলোতে নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা গতবছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের একই সময়ে ১৪.২৮ লাখ বেড়ে ২.৫৮ কোটিতে পৌঁছেছে।





এসব একাউন্টের ৭০ শতাংশই খোলা হয়েছে সোনালী, কৃষি, অগ্রণী ও জনতা, এই চার রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে। আর একাউন্ট সংখ্যায় শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের তালিকায় একমাত্র বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে আছে ব্যাংক এশিয়া।





ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও প্রাধান্যের তালিকায় আছে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক। এই দুই ব্যাংকেই মোট ডিপোজিটের ৬৪ শতাংশ জমা আছে।





গত এক বছরে স্কুল ব্যাংকিং একাউন্টে ডিপোজিটের পরিমাণও ১০০ কোটি টাকা বেড়েছে।





চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৩১ দশমিক ৮২ লাখ একাউন্টে মোট ডিপোজিটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২৭৯ কোটি টাকা। গতবছর একই সময়ে ২৯ দশমিক ৯৭ লাখ একাউন্টে ২১৭২ কোটি টাকা জমা ছিল।





কোভিডকালে দীর্ঘসময় বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খোলার পর ২০২১ এর সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে স্কুল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৮.৮৭% বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে।





অর্থসংবাদ/এসএম


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ