এশিয়া থেকেই বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রবাহ সবচেয়ে বেশি

এশিয়া থেকেই বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রবাহ সবচেয়ে বেশি
২০২১-২২ অর্থবছরে অঞ্চল বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগে (এফডিআই) প্রবাহ সবচেয়ে বেশি এসেছে আদার এশিয়ান কান্ট্রিজ (ওএসি) বা এশিয়ার দেশগুলো থেকে। এসব দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি ৯৯১ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে, যা গত অর্থবছরে ছিল ২৪৮ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার। পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরেও দেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এসেছে এশিয়ার দেশ থেকে। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ওএসি থেকে ১ হাজার ৪২৯ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৯২৯ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এফডিআই ও বিদেশী ঋণ শীর্ষক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিদেশী বিনিয়োগ প্রবাহ ২০২১-২২ অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ এসেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে। এ জোট থেকে ৬৮১ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ২০২০-২১ সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ ৭৩৪ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার এসেছে ইইউ থেকে। এছাড়া ২০১৫-১৬ ও ২০১৪-১৫ ৪৮০ দশমিক শূন্য ২ মিলিয়ন ডলার ও ৪৫৩ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে।

বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ প্রবাহে তৃতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ৬৮১ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলার এসেছে নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (নাফটা) থেকে। গত অর্থবছরে নাফটা থেকে মাত্র ৫২ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে। এ প্রবাহে চতুর্থ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ এসেছে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো থেকে ৩৮৬ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১৩৩ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। এখান থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সবচেয়ে বিনিয়োগ এসেছে ৮০৯ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার।

এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে ওইসি থেকে ২৪৫ দশমিক ৮৩, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (এসিইউ) থেকে ১৮০ দশমিক ৬৬, সার্ক থেকে ১৮০ দশমিক ৬৬, ওআইসি থেকে ১৭৩ দশমিক ৭৩২, ওপেকভুক্ত দেশ থেকে ৯৭ দশমিক ১৪ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ১৬ দশমিক ৫৬২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে।

সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আসা ওএসি শীর্ষক দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, চীন, ফিজি, গিলবার্ট, হংকং, জাপান, কাজাখস্তান, কিরিবাতি, দক্ষিণ কোরিয়া, কিরগিজ, ম্যাকাও, মঙ্গোলিয়া, নাউরু, নিউ ক্যালিডোনিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, তাইওয়ান, তাজিকিস্তান, টঙ্গা, তুর্কেমেনিস্তান, টুভ্যালু, ভানুয়াতু ও ওয়েস্টার্ন সামোয়া।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা সব দেশ থেকেই বিনিয়োগ চাই। তবে গত কয়েক বছর সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসছে চীন থেকে। এটা হয়তো বা ধারাবাহিকভাবে থাকবে। কারণ চীন থেকে অনেক ইন্ডাস্ট্রি মাইগ্রেট হচ্ছে। চীন থেকে দুই ধরনের মাইগ্রেট হচ্ছে, বিদেশী কোম্পানি চীনে ছিল এমন, আর চাইনিজ কোম্পানি। দুই ধরনের কোম্পানির জন্যই বাংলাদেশ সম্ভাব্য জায়গা হতে পারে। ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর হিসেবে আমরা চাই, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে যাতে বিনিয়োগ আসে। সেটা আরএমজি হোক বা নন আরএমজি। তবে দেখা যায়, প্রকৃতপক্ষে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসছে। সেটা প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান তৈরি না করলেও অপ্রত্যক্ষভাবে করছে। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকেও বাংলাদেশের এনার্জি সেক্টর, টেলিকমসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এসেছে বলে তিনি জানান।

দেশে নিবন্ধিত যৌথ এবং শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগের বাণিজ্যিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অর্থ আসে ব্যাংকিং চ্যানেলে। প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এন্টারপ্রাইজ সার্ভে বা সমীক্ষা চালিয়ে এফডিআই পরিসংখ্যান সংকলন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিট নিজস্ব মূলধন বা ইকুইটি, আয়ের পুনর্বিনিয়োগ বা রিইনভেস্টেড আর্নিং ও আন্তঃপ্রতিষ্ঠান ঋণ বা ইন্ট্রা কোম্পানি লোন এ তিন ভাগে এফডিআই প্রবাহ হিসাব করা হয়।

অর্থসংবাদ/কেএ

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ