সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। পতনের পেছনে গুজবকে দায়ী করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্র জানিয়েছে, রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ফলে এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া দেড় শতাধিক কোম্পানির দরপতন হয়। জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি গুজব ছড়িয়েছে ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে। এসব গুজবের ভুক্তভোগী সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ২৭ দশমিক ১৫ পয়েন্ট হারিয়েছে। বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক ‘ডিএস ৩০’ ১০ দশমিক ০২ পয়েন্ট কমেছে। শরীয়াহ সূচক ‘ডিএসই এস’ কমেছে ৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট।
মূল্য সূচকের সাথে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে আজ লেনদেনও কমেছে। রোববার এক্সচেঞ্জটিতে টাকার অংকে ৪৭০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬৮টি বা ৫১ দশমিক ৫৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর আজ কমেছে। বিপরীতে মাত্র ১১টি বা ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে ফ্লোর প্রাইসের কারণে ৪৫ শতাংশ কোম্পানির দরপতন ঠেকানো গেছে।
এদিকে বিএসইসির বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতনের পেছনে প্রধান কারণ ছিল গুজব। সূত্রটির দাবি, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে এমন গুজব ছড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করা হয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে কম দামে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
তবে বিএসইসির ওই সূত্র বলছে, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার বিষয়ে আপাতত কোন সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে না। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আর্ন্তজাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসকো) সম্মেলনের আগে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন সিদ্ধান্ত নেবে না। ফলে আপাতত ফ্লোর প্রাইস তুলছে না বিএসইসি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ফ্লোর প্রাইস নিয়ে কমিশনে কোন আলোচনাই হয়নি। কমিশন কোন সিদ্ধান্ত নিলে সেটি ১০ মিনিটের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বিশ্বের সব শেয়ারবাজারেই গুজব থাকে। তবে সেটি যেন কমিয়ে আনা যায় সেজন্য বিএসইসি কাজ করছে। যখনই কোন গুজব ছড়িয়ে পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি ক্লিয়ার করে দেওয়ার চেষ্টা করি। তখন গুজব আর স্থায়ী হয় না।
বিএসইসির মুখপাত্র বলেন, আমাদের সোস্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিম গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে। গুজবের বেশকিছু অভিযোগ বিচারাধীন। গত দুই বছরের মধ্যে ক্যাপিটাল মার্কেটে গুজব অনেক কমেছে। আমরা চাই গুজব জিরো লেভেলে রাখার জন্য। আশা করি গুজব শতভাগ প্রতিরোধ করা না গেলেও আগামীতে আরও কমে আসবে।
অর্থসংবাদ/ডব্লিও.এস