এমন ফলাফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গ্রামবাসী সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। তবে সংশোধিত ফল প্রকাশের পর ওই বিদ্যালয়ের বৃত্তিপ্রাপ্ত তিন শিক্ষার্থীই বাদ পরেছেন। ফলাফলের এমন বিড়ম্বনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
বাদ পড়া তিন শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা জানান, সন্তানদের কৃতিত্বে তারা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন এমন ফলাফলে তারা ও তাদের সন্তানেরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না। এতে করে সন্তানদের কোমল মনে দাগ কেটে গেল। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
রোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানায়, ২০০৮ সালে এ বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল। এরপর কোনো শিক্ষার্থী আর বৃত্তি পায়নি। এ বছর বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয় শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। প্রকাশিত প্রথম ফলাফলে তিন শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বৃত্তির তালিকা থেকে বাদ পড়া এক শিক্ষার্থীসহ তার বাবা প্রধান শিক্ষক আজাদুর রহমানের কাছে এসে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘স্যার রাতে খবর পেয়ে আমাদের পরিবারের কারও চোখে ঘুম আসেনি। আমি ছেলেকে সান্ত্বনা দিতে পারছি না।’
এসময় প্রধান শিক্ষক আজাদুর রহমান ও বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকেরা নির্বিকার থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা কেঁদে ফেলেন।
রোয়াইড় গ্রামের বাসিন্দা ও আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বলেন, ফলাফলের এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে খুবই কষ্টের। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে আহত হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক আজাদুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে সংশোধিত বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলের তালিকায় এ বিদ্যালয়ের ওই তিন শিক্ষার্থীর রোল নম্বর না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই হতাশ।
জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, গতকাল রাতে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নতুন ফলাফলে কে বাদ পড়ল আর কে যোগ হলো, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
গত মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণ দেখিয়ে একই দিন সন্ধ্যায় এ ফল স্থগিত করার কথা জানায় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। এরপর গতকাল বুধবার রাতে সংশোধিত ফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।