জানা গেছে, ওয়ালটনের ইউরোপ জয়ের লক্ষ্যে শুরু থেকেই ছিলো ব্যাপক পরিকল্পনা। দেশের বাজারে শীর্ষস্থান অর্জনের পর ওয়ালটনের পরিকল্পনা ছিলো বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করা। পোল্যান্ডে টেলিভিশন রপ্তানির মধ্য দিয়ে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম আরো গতি পেল।
সম্প্রতি পোলান্ডের ব্র্যান্ড ‘অপটিকাম’-এর সঙ্গে এ বিষয়ে ওয়ালটনের একটি চুক্তি হয়। রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন এবং ওয়ালটনের ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বিজনেস হেড তাওসীফ আল মাহমুদ। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পোলান্ড থেকে যোগ দেন ‘অপটিকাম’-এর সিইও রিচার্ড গ্র্যাবসহ প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওয়ালটনের ইউরোপিয়ান বিজনেস হেড তাওসীফ আল মাহমুদ বলেন, মধ্য ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত পোল্যান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। ৩৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ পোল্যান্ড ‘নতুন’ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে একক বৃহত্তম বাজার। এই রপ্তানির সুবাদে শুধু পোল্যান্ডই নয়, ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ওয়ালটনের পণ্য ব্যাপকভাবে ডিস্ট্রিবিউশন করা সহজ হবে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ পোল্যান্ডের বাজারে ওয়ালটনের তৈরি টেলিভিশন পাওয়া যাবে। এছাড়াও ‘অপটিকাম’ পোল্যান্ডে ওয়ালটন পণ্য অনলাইনে বিক্রয় কার্যক্রমেও পার্টনার হিসাবে ভবিষ্যতে কাজ করার আশা প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, পারস্পারিক ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে ‘অপটিকাম’ এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ওয়ালটন। এছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছরের মধ্যে ইউরোপের বাজারে ১ লাখ ইউনিট টেলিভিশন রপ্তানির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওয়ালটন টেলিভিশনের গবেষণা ও উন্নয়ন (আর এন্ড ডি), বিভাগ গ্রাহকের আস্থা অর্জনে পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সিই (সিই) কম্প্লায়ান্স নিশ্চিত করার জন্য সর্বাধুনিক ইউরোপীয়ান স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে তারা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও ইউরোপীয় নীতিমালা অনুযায়ী ওয়ালটন পণ্যে আরওএইচএস , আরইএসিএস এবং ইকো ফ্রেন্ডলি ডিজাইন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগারের মাধ্যমে মান যাচাইয়ের পাশাপাশি ওয়ালটনের নিজস্ব ল্যাবে পণ্যের কোয়ালিটি এবং রিলায়েবিলিটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম বলেন, বর্তমানে আমরা ইউরোপের বাজারে ওয়ালটনের উপস্থিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে কাজ করছি। এক সময় ওয়ালটনের স্মার্ট টিভি, রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনারের মতো পণ্য ছাড়াও আইটি, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ও এলইডি লাইটিং পণ্যও পশ্চিম এবং পূর্ব ইউরোপ জুড়ে পাওয়া যাবে। এই দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্য পৌঁছাতে পোল্যান্ডকে সেতু হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এভাবেই ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি ব্র্যান্ডের কাতারে উঠে আসার লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে ওয়ালটন।
এর আগে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর জন্য স্মার্ট টিভি তৈরিতে গুগলের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করেছে ওয়ালটন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একমাত্র উৎপাদনকারী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ডলবি’র লাইসেন্স পেয়েছে ওয়ালটন। এর ফলে ওয়ালটন টেলিভিশন বিশ্ববাজারে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।