মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও-এর নেতৃত্বে ডিবিএ’র পরিচালনা পর্ষদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নব-নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের সাথে সৌজন্য বৈঠককালে এসব কথা বলেন৷
অধ্যাপক ড. হাফিজ বলেন, আমরা চাই বাজারের পরিবর্তন। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে বাজারের উন্নয়ন করতে চাই। আমার সহকর্মীবৃন্দ সকলেই সহযোগী মনোভাবাপন্ন। সকলেই তাদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। বর্তমান বোর্ড বিশ্বাস করে, আপনাদেরকে ছাড়া পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই মার্কেটটা আসলে আপনাদেরই সৃষ্টি করা মার্কেট। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের প্রেক্ষাপটে আমরা হয়ত আজ এখানে এসেছি, কিন্তু এখানে আপনারাই প্রধান চালিকাশক্তি।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরকে সাথে নিয়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা করবো এবং এই প্রতিষ্ঠান, এই মার্কেট এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাবো। এটাই হলো আমাদের লক্ষ্য। আমাদের নিজস্ব কোন এজেন্ডা নেই। আমরা এখানে আপনাদের সাথে সমন্বয় করে এই পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে নিয়ে যাবো। আমাদের দুইজন সদস্য এখনও বোর্ডে যুক্ত হয়নি। আমরা দ্রুত তাদের নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা একটি গতিশীল মার্কেট চান। তেমনি আমরা একটি শক্তিশালী বোর্ড চাই। কারণ শক্তিশালী বোর্ড একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারে। আমরা প্রত্যেকেই সবসময় আপনাদের পাশে চাই। আপনাদের মাকের্ট আপনাদেরই ভালো করতে হবে। আমরা আপনাদের কথা শুনবো। আমরা একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করবো। ডিএসই’র উন্নয়নে আপনারা পরিকল্পনা করুন। পুঁজিবাজারকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে পুঁজিবাজার সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা পরিবর্তন করতে হবে। আপনারা কখনো আমাদের সাথে কথা বলতে সংকোচবোধ করবেন না। আমরা সব সেক্টর নিয়ে কাজ করবো। ভালো ইনভেস্টমেন্ট আনতে হলে ভালো ইন্সটুমেন্ট আনতে হবে। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। আজকে আমাদের এই বৈঠক মিলনমেলায় পরিণত হলো। আমাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমাদের সকলকে সততার সাথে সুন্দরভাবে এই পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। আজকের শুরুটা এমনভাবে হোক যেন একে অপরের মাঝে বন্ধন তৈরি হয়। আমরা নতুন বোর্ড, বুঝার চেষ্টা করছি। আমরা আপনাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নেব। এই বিষয়ে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর নবনিযুক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, মো. আফজাল হোসেন এবং রুবাবা দৌলা, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ সাজেদুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন।
ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, পুঁজিবাজারের প্রাইমারী রেগুলেটরের এই মর্যাদাপূর্ণ পদে আপনাদের নিয়োগ নিঃসন্দেহে আপনাদের সম্ভাব্যতা ও দক্ষতা নিয়ে সরকারের যে আস্থা রয়েছে তারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা নিশ্চিত যে, আপনার সফল নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং দিক নির্দেশনায় পুঁজিবাজার আগামীতে আরও বেশি উচ্চতা এবং সাফল্য অর্জন করবে। আপনার একাডেমিক রেকর্ড, দক্ষতা এবং আইসিটি জগতের বহুমূখী পেশাদারিত্ব অভিজ্ঞতায় পুঁজিবাজারের গতিশীলতা আনয়ন করবে৷
ডিবিএ’র পরিচালকরা আরও বলেন, পুঁজিবাজারের ব্যবসাটাই মূলতঃ ব্রোকারদের মূল ব্যবসা। ব্রোকাররা সবসময় নিজেদের স্বার্থেই পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থানে দেখতে চায়। স্টক ট্রেডিং বেইজড ইনকামের পাশাপাশি ডেটা সেল সহ অন্যান্য খাত থেকে আয় বৃদ্ধি করতে হবে। ২০১৩ সালের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের পূর্বে এই ব্রোকাররাই পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণ করত। আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত পুঁজিবাজার গঠন করতে পারব। বর্তমানে লেনদেনের ভলিউম প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। এই ভলিউম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ব্যবসায়িক পরিবেশে কি ধরনের মডেল কাজ করবে তা খুঁজে বের করতে হবে। ডিএসইকে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ডিএসইকে একটি শক্তিশালী নেগোসিয়েটর হিসেবে দেখতে চাই। স্টক এক্সচেঞ্জের টেকনোলজিতে আরও উন্নতি চাই। আশা করি, আপনাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এবং আপনাদের সহযোগিতায় আগামী দিনে একটি শক্তিশালী স্টক এক্সচেঞ্জ তৈরি করতে পারবো।
পরিশেষে ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে এই এসোসিয়েশনের প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে৷ সেই সাথে তিনি ডিবিএ’র সদস্যদের প্রতি আহবান জানান, ডিএসইকে সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার।