দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়িতে

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়িতে
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজটি ভিড়েছে মাতারবাড়িতে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে এসেছে জাহাজটি।

মঙ্গলবার বিকালে মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভেড়ে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘অউসো মারু’। ইন্দোনেশিয়ার তারাহান থেকে কয়লা নিয়ে সিঙ্গাপুর হয়ে এসেছে জাহাজটি।

২২৯ মিটার দীর্ঘ এবং সাড়ে ১২ মিটার ড্রাফটের (পানিতে নিমজ্জিত অংশের গভীরতা) জাহাজটি সোমবার মাতারবাড়ি উপকূলে এসে পৌঁছায়।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় জাহাজটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভেড়ানো হয় বলে জানান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) নির্বাহী পরিচালক (প্রকল্প) আবুল কালাম আজাদ।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, “মাতারবাড়ি চ্যানেলে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে ইতোমধ্যে আমরা ১২০টির বেশি জাহাজের বার্থিং করেছি।

“আজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ মাতারবাড়ির কয়লা জেটিতে ভিড়ছে। মাতারবাড়ি টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ডিপ ড্রাফট ভেসেল তথা ১৬ মিটার বা তার চেয়ে বেশি গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে সক্ষম হবে।”

আবুল কালাম বলেন, অউসো মারু জাহাজটির ধারণ ক্ষমতা ৮০ হাজার মেট্রিক টন। তবে জাহাজটি মোট ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এসেছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঁচামাল কয়লা নিয়ে এই প্রথম কোনো জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়ির জেটিতে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সোমবার মাতাড়বাড়ি উপকূলে পৌঁছায় জাহাজটি।

‘অউসো মারু’ নামের এই জাহাজে থাকা কয়লা খালাস করতে ছয়-সাতদিন সময় লাগতে পারে জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভবিষ্যতে এর থেকেও বড় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে।

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রথম জেটিটি নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ ‘এমভি ভেনাস ট্রায়াম্প’ প্রথম সেখানে ভিড়েছিল। এরপর মাতারবাড়িতে আসা জাহাজগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে এসেছিল।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন করে ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে।

অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পাশে ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পাশে ৬৭০ মিটার ঢেউ নিরোধক বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে হয়েছে।

সেখানে ৪৬০ মিটার কন্টেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি এবং কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ সব বন্দর সুবিধা থাকবে।

কয়লা নিয়ে আসা জাহাজটি মঙ্গলবার বিকালে ভেড়ে মাতারবাড়ির জেটিতে।

এসব কাজের মধ্যে জুলাই নাগাদ জেটি ও কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ শুরু করার আশা রয়েছে।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নে ৫১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নিয়ে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে।

সঙ্গে এই কেন্দ্রের কয়লা আমদানির জন্য জেটি নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছিল সেখানে। পরে সেটিই গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে রূপ নেয়।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ