গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ভালো অবস্থানে ছিল না। তবে চলতি বছরের শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টক দ্বিগুণ বেড়েছে। ন্যাশনালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেঞ্চুরি ফাইন্যান্সিয়ালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ভিজয় ভালেচা বলেন, ‘ব্যাংক খাতে অস্থিরতার কারণে প্রযুক্তি খাত কিছুটা সহায়তা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩৮টি কোম্পানির মধ্যে ৮১ শতাংশ তাদের পূর্বাভাসের তুলনায় প্রথম প্রান্তিকে বেশি আয়ের কথা জানিয়েছে।’
কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী ঘুরে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে অ্যালফাবেট প্রতি মিনিটে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৫৮০ ডলার আয় করেছে। মূলত সার্চ ইঞ্জিন ও ক্লাউড ইউনিটের ব্যবসার মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা গেছে এবং প্রথমবারের মতো লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ৬ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অ্যালফাবেটের বর্তমান বাজারমূল্য ১ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার।
মাইক্রোসফট প্রথম প্রান্তিকে প্রতি মিনিটে ৪ লাখ ৮ হাজার ১৭৯ ডলার আয় করেছে। ক্লাউড ব্যবসার পাশাপাশি লিংকডইন থেকে এ আয় হয়েছে। কোম্পানিটি জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ৫ হাজার ২৯০ কোটি ডলার আয় করেছে। এর বাজার হিস্যা ২৮ শতাংশ বেড়েছে এবং বাজারমূল্য ২ দশমিক ২৯ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
ইউবিএসের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ও বিশ্লেষক সানদীপ গনতরী এক গবেষণা নোটে জানান, সম্প্রতি কোম্পানিটি যে আয় করেছে তা মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রসারকেই চিহ্নিত করছে। তিনি বলেন, ‘অ্যালফাবেট ও মাইক্রোসফট তাদের আয় প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ৫০ বারের বেশি এআইয়ের কথা উল্লেখ করেছে।’
বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি উৎপাদনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে টেসলা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৪ লাখ ২২ হাজার ৮৭৫ ইউনিট গাড়ি সরবরাহ করেছে। এর মাধ্যমে মাস্কের কোম্পানি প্রতি মিনিটে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮৩ ডলার আয় করেছে। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে লভ্যাংশ ২৪ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারে উত্তীর্ণ হয়েছে।
ভিডিও স্ট্রিমিং পরিষেবা প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্স প্রথম প্রান্তিকে ৮১৬ কোটি মুনাফা আয় করেছে। এ প্লাটফর্মটি প্রতি মিনিটে ৬২ হাজার ৯৬২ ডলার আয় করেছে। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ১৪ হাজার ৬৬৬ কোটি ডলার।
ফেসবুকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা ৩১ মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে প্রতি মিনিটে ২ লাখ ২০ হাজার ৬৭৯ ডলার আয় করেছে। এ সময় ফেসবুকের দৈনিক ও মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০৪ কোটি ও ২৯৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কোম্পানিটি ২ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার আয় করেছে এবং এর বর্তমান বাজারমূল্য ৬১ হাজার ৬৫১ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রেকর্ড করেছে অ্যামাজন। কোম্পানিটি প্রতি মিনিটে ৯ লাখ ৮৩ হাজার ২৪ ডলার আয় করেছে। কভিড-১৯ মহামারীর কারণে স্পর্শবিহীন কেনাকাটা ও অনলাইন লেনদেন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ কারণে অ্যামাজনে গ্রাহকের অংশগ্রহণও বেড়েছে। সিয়াটলভিত্তিক কোম্পানিটির আয় প্রথম প্রান্তিকে ১২ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার।