কোম্পানির ১৩ কোটি ৬১ লাখ বা ২ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার এমপ্লয়িস স্টক পারচেজ প্ল্যানের (ইএসপিপি) অধীনে রবির কর্মচারীদের দেয়া হবে, যা আইপিওর অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
কোম্পানিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশন এ অনুমোদন দিয়েছে বলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে নিশ্চিত করেছেন।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ফলে আইপিওতে আসতে পাবলিক ইস্যু বিধির যে বাধা ছিল তা দূর হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রবি ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) একটি নির্দেশ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিল। যেখানে বলা ছিল যে, আইপিও ইস্যুয়ারকে শেয়ার মানি ডিপোজিট’র বিপরীতে শেয়ার ইস্যু করতে হবে।
এর আগে রবি আইপিওতে নতুন শেয়ার জারির মাধ্যমে বাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করে। এ জন্য ফেস ভ্যালুতে বা ১০ টাকা মূল্যে ৫২ কোটি ৩৮ লাখ নতুন শেয়ার ইস্যু করার কথা বলা হয়।
নতুন শেয়ারের মধ্যে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে বলে জানায় রবি, যা কোম্পানির পোস্ট-আইপিও শেয়ারের ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। ইএসপিপির আওতায় ১৩ কোটি ৬১ লাখ বা ২ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার কর্মীদের কাছে বিক্রির কথা বলা হয়।
রবি তার কর্মীদের কাছে এই শর্ত নিয়ে শেয়ার বিক্রি করেছিল, যে বিএসইসি কোম্পানির আইপিও অনুমোদন করলেই তারা শেয়ার বরাদ্দ পাবে। অন্যথায় কোম্পানি কর্মীদের টাকা ফেরত দেবে।
কিন্তু পাবলিক ইস্যু বিধি অনুযায়ী, ফিক্সড প্রাইস বা অভিহিত মূল্যে আইপিওতে কোম্পানির কমপক্ষে ১০ শতাংশ শেয়ার ইস্যু করতে হবে।
অপরদিকে বিদ্যমান আইন অনুসারে, আইপিও আবেদন জমা দেয়ার আগে মূলধন উত্তোলনের মাধ্যমে যে কাউকে শেয়ার বরাদ্দ করা সম্ভব, যেটি সাধারণভাবে প্লেসমেন্ট নামে পরিচিত। কিন্তু আইপিও পাস হওয়ার পর আইনে বর্ণিত কোটার বাইরে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীকে শেয়ার বরাদ্দ করা সম্ভব নয়।
আইনের এই বাধার ফলে রবির আইপিও আটকে থাকে। কর্মীদের কাছে ইএসপিপির আওতায় ১৩ কোটি ৬১ লাখ বা ২ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়টি আইপিও'র আওতায় আনার সুযোগ দেয়ায় ১০ শতাংশের কোটা পূরণ হচ্ছে। সেই সঙ্গে আইনের বাধাও দূর হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, রবির আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশন পাবলিক ইস্যু বিধির কিছু বিষয়ে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এক্সামিনেশনের জন্য বিএসইসির সেকশন ২৯ এর অধ্যাদেশ নটিফিকেশন দেয়া হয়েছে। বিষয়টি এখন গেজেট আকারে প্রকাশ হবে।
১৯৯৭ সালে টেলিকম মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল (বাংলাদেশ) একটেল ব্র্যান্ড নামে কোম্পানিটি কাজ শুরু করে। ২০১০ সালে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে রবি আজিয়াটা লিমিটেড করা হয়।
২০১৬ সালে এয়ারটেল বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পরে কোম্পানিটি দ্বিতীয় বৃহত্তম টেলিকম অপারেটর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং একই নাম ধরে রেখেছে। এই একীভূতকরণের কারণে বেশ কয়েক বছর লোকসানের পরে গত বছর কোম্পানি মুনাফা অর্জন করে।
এশিয়ার টেলিযোগাযোগ বাজারের অন্যতম কোম্পানি আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদের (মালয়েশিয়া) একটি কোম্পানি হচ্ছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড (রবি)। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর। অপারেটরটি ডিজিটাল সেবা চালুর দিক থেকে অনেক ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করছে। একই সঙ্গে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দোরগোরায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার জন্য ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছে। কোম্পানিটিতে ভারতী এয়ারটেলেরও অংশীদারিত্ব রয়েছে।
মালয়েশিয়ার টেলিকম জায়ান্ট আজিয়াটা গ্রুপ বেরহাদের কাছে রবি আজিয়াটার ৬৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।