ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার গুজবে শেয়ারবাজারে পতন, অনড় বিএসইসি

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার গুজবে শেয়ারবাজারে পতন, অনড় বিএসইসি
হতাশা কাটিয়ে গত কিছুদিন ধরে আশার আলো দেখাচ্ছিল দেশের শেয়ারবাজার। লেনদেনেও ফিরেছিল স্বস্তি। তবে একটি চক্র ফের গুজব ছড়িয়ে শেয়ারবাজারকে অস্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে এমন গুজবে সোমবার (১৫ মে) দেশের শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। তবে ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার বিষয়ে এখনো অনড় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার এক্সচেঞ্জটির প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ৩ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমেছে। একইসঙ্গে অপর দুই সূচক ‘ডিএস ৩০’ ৪ দশমিক ৪২ পয়েন্ট এবং ‘ডিএসই সূচক’ এদিন ২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট হারিয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার শেয়ারবাজারে পতনের পেছনে একটি চক্রের ইন্ধন রয়েছে। চক্রটি বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হবে এমন গুজব ছড়িয়ে দেয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ফলে আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা কম দামেই শেয়ার বিক্রি করে দেয়। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পক্ষে নয়। বরং শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার বিষয়ে এখনো অনড় সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, টানা দরপতন ঠেকাতে গত বছরের ২৮ জুলাই শেয়ারবাজারে পুনরায় ফ্লোর প্রাইস চালু করে বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের প্রথম দিনই (৩১ জুলাই) দেশের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। সেদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ১৫৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। এছাড়াও ফ্লোর প্রাইস জারির প্রথম সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। বিএসইসির আদেশের পর ওই সময় পুঁজিবাজারে স্বস্তি ফিরলেও একটি চক্র ফ্লোর প্রাইসকেই গুজবের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। শেয়ারদরের সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দেওয়ার পর বেশ কয়েকদিনই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার গুজব ছড়ায় চক্রটি। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেয়। ফলে পতন হয় শেয়ারবাজারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান অর্থসংবাদকে বলেন, একটি দুষ্ট চক্র শেয়ারবাজারে ধস নামাতে চেয়েছিল। সেটি রোধ করার জন্যই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস দিয়েছে। আস্তে আস্তে অনেক কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠে যাচ্ছে। আমার মনে হয় এই মুহুর্তে ফ্লোর তুলে দেওয়া যুক্তিসংগত হবে না।

তিনি আরও বলেন, বিএসইসি যে চিন্তাভাবনা করে ফ্লোর প্রাইস দিয়েছে সেটি সঠিক। বড় বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হলে ফ্লোর প্রাইস উঠে যাবে। কমিশনের আলাদাভাবে ফ্লোর প্রাইস তোলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। একটি গ্রুপ বসে আছে ফ্লোর প্রাইস তুলে বাজারে ধস নামিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে কিনা সেটি চেয়ারম্যান স্যার ক্লিয়ার করেছেন। এটা নিয়ে গুজবের কিছু নাই।

তিনি বলেন, গুজব সাধারণত মোবাইলে এসএমএস, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ানো হয়। বিএসইসি এখন সোস্যাল মিডিয়া মনিটরিং আইন করা যায় কিনা সেটি নিয়ে ভাবছে। বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। গুজব কিভাবে মিনিমাম লেভেলে রাখা যায় সে বিষয়ে এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) সঙ্গে আলোচনা চলছে। অন্যান্য দেশে কিভাবে এসব বিষয় মনিটরিং করা হয় সেটি নিয়েও গবেষণা করা হচ্ছে।

বিএসইসির মুখপাত্র আরও বলেন, সাধারণত ম্যানুয়ালভাবে গুজব ধরা সম্ভব নয়। তাই গুজব প্রতিরোধে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে কোন সফটওয়্যার নেওয়া যায় কিনা সেটিও আমরা ভাবছি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত