শনিবার (২০ মে) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত দেশে একযোগে ১৯টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভর্তি কমিটি। ‘বি’ ইউনিটে বহুনির্বাচনী প্রশ্নে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজিতে ৩৫ নম্বর করে মোট ৭০ নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞানে ৩০ নম্বর ছিলো। পরীক্ষায় প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য শিক্ষার্থীরা ১ নম্বর পাবে। আর প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পাস নম্বর ৩০। আগামী ২৭ মে ‘সি’ (বাণিজ্য) ইউনিটের এবং ৩ জুন ‘এ’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দিনে ‘বি’ ইউনিটে সাত হাজার ৭৪৬ আসনের বিপরীতে ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নেয় ছিয়ানব্বই হাজার ৪৩৪ জন পরিক্ষার্থী।
সকাল থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নির্ধারিত সময়ের আগে আসতে শুরু করে পরীক্ষা কেন্দ্রে। ঢাকা সহ আশেপাশের জেলার শিক্ষার্থীদের পছন্দের কেন্দ্র ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
সরজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট সহ আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ ক্যাম্পাসের গেইট গুলো খুলে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা একে একে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন। বিভিন্ন জেলার ছাত্র কল্যাণ পরিষদ গুলো তাদের নিজ নিজ জেলার নামে ব্যানার নিয়ে দুরথেকে আগত পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে টেবিল নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক ও জবি গেটের আশেপাশে অবস্থান করে।
ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সকল অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়ালবডির সদস্যগণ সকাল থেকে ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেন।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্ন তুলে দেয় শিক্ষকেরা। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন পেয়ে সাথে সাথে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে শুরু করে প্রত্যেকটা কেন্দ্রে। ক্যাম্পাসে প্রশ্ন ফাঁস রোধে ভ্রাম্যমান ম্যাজিস্ট্রেট টহলরত অবস্থায় ছিলো সার্বক্ষণিক। এই সময় পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক। সাথে ছিলেন ট্রেজারার ড. কামালউদ্দীন আহমদ, রেজিস্টার ওয়াহিদুজ্জামান ও বিভিন্ন বিভাগের ডিন, প্রক্টোরিয়ালবডির সদস্যগণ।
জবি কেন্দ্রে আসা ফেরদৌস আল মামুন নামে এক পরিক্ষার্থী বলেন, 'প্রশ্নপত্রের মান ভালো ছিল। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মধ্য থেকে প্রশ্ন এসেছে। প্রশ্ন নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই।'
জাহিদ হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'বাংলা ও ইংরেজি প্রশ্ন অনেক ভালো ছিল। কিন্তু সাধারণ জ্ঞানে একটু সমস্যা হয়েছে। কারন এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে।'
এ বিষয়ে গুচ্ছ পরিক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জবি উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক বলেন, 'প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মধ্যেই করা হয়েছে। যারা তুলনামূলক একটু দেরি করেও কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিল প্রত্যেককে আমরা পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছি। কাউকে ফিরিয়ে দেইনি। ভুলক্রমে যারা জবি কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিলো তাদেরও পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'পরিক্ষা কেন্দ্রে যেকোন ধরনের আপত্তিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সদা তৎপর ছিল এবং প্রশ্ন ফাঁসেরও কোনো রকম সম্ভাবনা নেই যেহেতু এ বিষয়ে আমরা পূর্ব থেকে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করেছি।
পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময় জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য বলেন, 'আমাদের পরিকল্পনা আছে দুই তিন দিনের মধ্যে দিয়ে দেওয়ার। কারণ জুন মাসের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে ক্লাস শুরু করা হবে সে লক্ষে যতদ্রুত সম্ভব ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, ‘বি’ ইউনিটের পরিক্ষা সফল করার জন্য সার্বিক সাহায্য করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার্স ইউনিট, পুলিশ, আনসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারী।