তিন বাধা দূর করে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ

তিন বাধা দূর করে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে তিনিটি বাধার মুখোমুখি হচ্ছে। রাজস্ব আদায়কারী এই সংস্থাটি মতে বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে গৃহীত কার্যক্রমে ধীরগতি, সঠিক এইচএস কোডে শুল্কায়ন না করা এবং প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব। তবে এই বাধাগুলো দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মূলত এই তিন কারণে সুযোগ থাকা সত্বেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না। ঠিকমত রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এগুলো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা। তবে এগুলো ছাড়াও উচ্চ লক্ষ্যমাত্রার রাজস্ব আহরণ, বকেয়া আদায়, রিট মামলার ব্যবস্থাপনা, জনবলের স্বল্পতা, ভৌত অবকাঠামো ও যানবাহন স্বল্পতা ইত্যাদির কারণেও শুল্ক আদায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা চিহ্নিত করতে গিয়ে সম্প্রতি এমন অভিমত ব্যক্ত করেছে এনবিআরের রাজস্ব আদায় বিভাগ। তবে সমস্যা সমাধানে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। রাজস্ব বিভাগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে বিভাগের সমক্ষতা বাড়ানো, যথাযথ জনবল বাড়ানো, শুল্ক স্টেশনসহ কাস্টম হাউজের আধুনিকায়ন সম্পন্ন করা। বাংলাদেশ কাস্টম ও পেপারলেস শুল্কায়ন ব্যবস্থার প্রচলন করা। কাস্টম আধুনিকায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো, অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন, প্রি-অ্যারাইভাল প্রসেসিং, অটোমেটেড কাস্টম রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট ইত্যাদি বাস্তবায়ন করা।

বাজেট ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজেটে ঘোষিত এনবিআরের আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও প্রতি বছরই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াচ্ছে সরকার। যেমন- সমাপ্ত অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) সংশোধিত বাজেটে শুল্ক খাতের এক লাখ এক হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও এর আগের অর্থবছরের (২০২১-২০২২) তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

এদিকে, চলতি অর্থবছরে শুল্ক খাতে মোট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক খাতে ৬০ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা (সমাপ্ত অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮,৫২৪ কোটি টাকা ও সংশোধিত বাজেটে ৫৩,৬৭৫ কোটি টাকা), আমদানি শুল্ক খাতে ৪৬ হাজার ১৫ কোটি টাকা (সমাপ্ত অর্থবছরের মূল ও সংশোধিত বাজেটে এ খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩,৯৯৪ কোটি টাকা), রপ্তানি শুল্ক খাতে ৬৬ কোটি টাকা ও আবগারি শুল্ক খাতে চার হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা (সমাপ্ত অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪,১২৭ কোটি টাকা ও সংশোধিত বাজেটে ৩,৯৪১ কোটি টাকা) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে শুল্ক আদায়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে শুল্ক বিভাগ। এছাড়া, চলতি অর্থবছরে এক হাজার ৯০০টি পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট (কাস্টম) সম্পন্ন করা, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নির্ধারিত কাস্টম বিধিবিধান সহজ করা, নতুন কাস্টম আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন গ্রহণ এবং পণ্যের শ্রেণিবিন্যাস নির্ধারণের জন্য নির্ধারিত অ্যাডভান্স রুলিং ও শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কিত আদেশ জারির পরিকল্পনা নিয়েছে শুল্ক বিভাগ। এর ফলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করে সংস্থাটি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ