জুনে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার বেড়েছে

জুনে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার বেড়েছে

জুন মাসে ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানতের গড় সুদহার বেড়েছে। মাসটিতে ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড ২ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা তার আগের মাস মে’তে ছিল ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর আমানত ও ঋণের সুদহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।


আমানতের সুদহার বাড়াটে ভালো চোখে দেখছেন ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা। এতে তারল্য সংকট দূর হতে পারে বলেও মত তাদের। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, সুদের হার বেড়েছে, এটা ভালো খবর। একটা দীর্ঘসময় পরে এটা বেড়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমবে।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, গত জুনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গড়ে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ সুদে আমানত নিয়েছে। এসময়ে ঋণ বিতরণ করেছে গড়ে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ সুদহারে। এতে ব্যাংক খাতের ঋণ ও আমানতের মধ্যকার সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর মে মাসে স্প্রেড ছিল ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। মাসটিতে ব্যাংকগুলো গড়ে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ সুদে আমানত নিয়ে ঋণ বিতরণ করেছে গড়ে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ সুদহারে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মতে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ স্প্রেডে ঋণ বিতরণ করতে পারবে। জুনে দেশে অপারেশনে থাকা ৬১ ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত ও ঋণের স্প্রেড ব্যবধান ছিল বিদেশি ব্যাংকগুলোর।


জুন মাসে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৬ ব্যাংকের গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর মধ্যে দু’টি ব্যাংকের স্প্রেড ঋণাত্মক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুন শেষে বেসিক ব্যাংকের স্প্রেড ঋণাত্মক ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আলোচিত সময়ে ব্যাংকের আমানতের গড় ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ঋণ বিতরণের গড় ছিল ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। আমানতের চেয়ে ঋণে কম সুদহার হওয়াতে স্প্রেড ঋণাত্মক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল’র স্প্রেড ঋণাত্মক ছিল ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। জুনে এ ব্যাংকটির আমানতের গড় সুদহার ছিল ৬ দশমকি ১২ শতাংশ আর ঋণের গড় সুদ ছিল ৪ দশমকি ৮৭ শতাংশ।


আলোচিত সময়ে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণের গড় ব্যবধান ছিল ১ দশমিক ২০ শতাংশ। দেশে কার্যরত বিদেশি ব্যাংকগুলোর গড় ব্যবধান ছিল ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণের স্প্রেড বেশি হওয়ার কারণ এ ব্যাংকগুলোর ঋণের গড় সুদহার বেশি ছিল আর আমানতের গড় সুদহার ছিল কম।


জুন মাসে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদহার ছিল ১ দশমিক ১৭ শতাংশ, ঋণে ছিল ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এসময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান আমানত ও ঋণের স্প্রেড ঋণাত্মক ছিল ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ ব্যাংকটি গড়ে আমানত নিয়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশে আর গড় ঋণ বিতরণ করেছে শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশে।


জুনে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড হয়েছে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ পয়েন্ট। বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ পয়েন্ট। আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে তিনটি ব্যাংকের স্প্রেড ঋণাত্মক দাঁড়িয়েছে। জুনে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঋণাত্মক ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ, পদ্মা ব্যাংকের ঋণাত্মক ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঋণাত্মক শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ