আগারগাঁওয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শনে এসে গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট-তেজগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত ১০-১১ মিনিটে কাভার করবে। এখানে অনেক যাত্রী আসা-যাওয়া করবে। অবশ্যই এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাবে রাজধানীবাসী। এর সঙ্গে যখন মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হয়ে যাবে, তখন সুফল আরো বেড়ে যাবে এবং ঢাকা আরো আধুনিক শহরে রূপ নেবে। যান চলাচল আরো সহজ হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ৬৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। এখন যে অংশের উদ্বোধন হচ্ছে না, সেখানেও অনেক কাজ হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি ২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের পুরোটা চালু করতে পারব। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের গন্তব্য এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট থেকে মগবাজার, মগবাজার থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত। পুরো অংশের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ মোট ৪৬ কিলোমিটার।’
কাওলা-ফার্মগেট অংশে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে শুরু হবে যানবাহন চলাচল। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ গতকাল এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়েতে দুই ও তিন চাকার যানবাহন এবং পথচারী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর যেকোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা নিষেধ। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। ওঠানামার র্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে নির্দিষ্ট স্থানগুলো থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামা করার জন্য যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে। এতে জানানো হয়, উত্তরা থেকে ফার্মগেটমুখী যানবাহন কাওলা, প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব এলাকা থেকে উঠতে পারবে। অন্যদিকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে ও ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডে নামতে পারবে।
অন্যদিকে ফার্মগেট থেকে কাওলামুখী যানবাহন বিজয় সরণি ওভারপাস ও বনানী রেল স্টেশনের সামনের র্যাম্প দিয়ে উঠতে পারবে। একইভাবে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর সামনে, কুড়িল বিশ্বরোডে এবং বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নামতে পারবে যাত্রীরা।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা খরচ করে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি তৈরি করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠান ইতালথাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠন করা হয় ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নামের একটি বেসরকারি কোম্পানি। নির্মাণ-পরবর্তী সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে এ কোম্পানি।
এক্সপ্রেসওয়েটি তৈরি হচ্ছে সরকারের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে। বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্পটি ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের সড়কপথের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। অন্যদিকে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হলে ঢাকা ইপিজেড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে। ঢাকার যানজট নিরসনের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।