সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার

সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার
আমদানি নির্ভর দেশ হওয়ায় বাংলাদেশকে বরাবরই বৈদেশিক মুদ্রার উপর নির্ভর থাকতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি ডলারের তুলনায় টাকার মান কমে আসায় বেশ বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। বাড়তি দামে আমদানি করতে গিয়ে বাধ্য হয়ে রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হচ্ছে। এদিকে রিজার্ভের মূল উৎস রপ্তানি এবং প্রবাসী আয় চাহিদা অনুযায়ী না আসায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ২৯ কোটি ডলার ও নিট রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার।

দেশের বকেয়া বৈদেশিক ঋণ ও আমদানির দেনা পরিশোধ করতে রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। ফলে ডলারের বাজারে চাপ বাড়ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে ডলারের দাম। এ কারণে আমদানি পণ্যের দাম বাড়ছে। এর প্রভাবে বাড়ছে অন্যান্য পণ্যের দাম। মূল্যস্ফীতির হারও বেড়ে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, ১৫ সেপ্টেম্বর দিনের শুরুতে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা ২ হাজার ৭৩৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ২৯ কোটি ডলার।

১৫ সেপ্টেম্বর নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৭১ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার। গ্রস রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগ করা অর্থ বাদ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ায় এ খাতে বেশি কমেছে।

এদিকে ডলার সাশ্রয় করতে আমদানি ব্যয় বেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। এতে মাসিক আমদানি ব্যয় ৪৫০ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ ৮৫০ কোটি ডলার আমদানি ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে আমদানি ব্যয় বেড়ে প্রতি গড়ে ৬৫০ কোটি ডলার খরচ হচ্ছে।

এ হিসাবে বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটি দেশের কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকলে তাকে নিরাপদ ধরা হয়। তবে খাদ্য আমদানি করলে বা বৈশ্বিক বা অভ্যন্তরীণ ঝুঁকি থাকলে আরও বেশি রিজার্ভ রাখতে হবে। বর্তমানে দেশ খাদ্য আমদানি করে এবং বৈশ্বিক ও দেশিয়ভাবে অর্থনীতিতে নানা ঝুঁকি রয়েছে।

এ কারণে রিজার্ভ তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের চেয়ে বেশি রাখতে হবে। এদিকে ৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন (১০০ কোটিতে এক বিলিয়ন) ডলারের ঘর থেকে নেমে আসে ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। ওই সময়ে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২ হাজার ১৪৮ কোটি ডলার। পরে গত সপ্তাহে তা বেড়ে ২ হাজার ১৭১ কোটি ডলারে ওঠে। এখন আবার কমেছে।

ব্যাংকগুলো আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রতিদিনই হিমশিম খাচ্ছে। ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ডলার দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে বাজার থেকেও ডলার সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। কারণ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি কম হওয়ায় ডলারের প্রবাহ কমে গেছে। এদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ায় ডলারের চাহিদা বেড়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ