মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত সোমবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর ও রাজধানীর মালিবাগ থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন চক্রের হোতা নিশাত মুন্না (২০), কামরুল ইসলাম শুভ (২৭), সুমন (৩৫) ও নাজমুল হোসেন বাবু (৩১)।
তাদের কাছে থেকে ১৬টি মোবাইল ফোন, ১৮টি সিমকার্ড, কম্পিউটারের সিপিইউ ও একটি মনিটর জব্দ করা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ের ছাত্র নিশাত মুন্না দেড় বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গ্রুপের বিজ্ঞাপন দেখে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হন। তাকে দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফরম থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। নিশাত আরো অর্থ লাভের আশায় বিভিন্ন বেটিং সাইটের প্রচার ও অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হন। পরে নিজেই অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম শুরু করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কামরুল ইসলাম স্নাতক শেষ করে একটি মোবাইল কম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করেন। দেড় বছর আগে নিশাতের সঙ্গে তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরিচয় হয়। নিশাতের মাধ্যমে তিনিও অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে যান।
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, দেড় বছর ধরে বাংলাদেশে এই চক্রটি বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটের কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। চক্রের হোতা নিশাত মুন্নার নেতৃত্বে সাত-আটজন সদস্য বিভিন্ন এলাকায় সাইটের প্রচার, অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ লেনদেন, হুন্ডির মাধ্যমে পাশ্ববর্তী দেশে অর্থ পাঠানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মূলত তারা বিশ্বকাপ, আইপিএল, বিপিএল, বিভিন্ন ফুটবল লিগ ও অন্যান্য খেলাকে কেন্দ্র করে উঠতি বয়সী তরুণদের টার্গেট করে অনলাইন জুয়ার প্রচার চালাতেন।
তিনি আরো বলেন, আগ্রহী ব্যক্তিদের বিভিন্ন সাইটের অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন চক্রের সদস্যরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্টে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন, সরাসরি মানুষের কাছে বলার মাধ্যমে এই জুয়ার সাইটের প্রচারের কার্যক্রম চালাত। নতুন গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খুললে তারা কমিশন পেত।
জুয়ার সাইটগুলোর কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে বন্ধ করা হলে চক্রের সদস্যরা ডোমেইন পরিবর্তন করে আবারও চালু করতো। তারা অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।