সোমবার (৩০ নভেম্বর) এ সম্মেলন হবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, জাতীয় ইমাম সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ ইমামকে আনা হচ্ছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি থাকবেন মসজিদে নববির ইমাম শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান। সম্মেলনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের পুরস্কৃত করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ ইমাম সম্মেলনকে বিশেষভাবে দেখছেন অনেকে। তারা বলছেন, সম্মেলনে ভোটের বিষয়ে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে, দেশে ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৮০ হাজার আলেম-ওলামা। সরকার তাদের প্রতি মাসে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী ভাতা দিয়ে থাকে। এই শিক্ষকেরা ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এর বাইরেও কয়েক হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম আছেন। সেই ইমামদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, ‘৩০ অক্টোবর (সোমবার) ইমাম সম্মেলন হবে। সেখান মসজিদে নববির ইমাম আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আমরা আশা করছি এক লাখের মতো ইমাম সম্মেলনে আসবেন।
ওই অনুষ্ঠানে ষষ্ঠ দফায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, পূর্বাচল ভেন্যু থেকে আমরা দুটি মডেল মসজিদে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবো। একটি মডেল মসজিদ পাবনায় ও আরেকটি কুড়িগ্রামে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় স্থাপন করতে নয় হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে গ্রহণ করে সরকার। ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক (২য় সংশোধিত) প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। গণপূর্ত অধিদপ্তর মসজিদগুলো নির্মাণ করছে।
এরই মধ্যে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে, গত ১৭ এপ্রিল চতুর্থ পর্যায়ে এবং গত ৩০ জুলাই পঞ্চম পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে মোট ৩০০টি মডেল মসজিদ চালু হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জমির ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে। এরমধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চারতলা, উপজেলা পর্যায়ে তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৯টি (নবগঠিত ৪টি উপজেলাসহ) এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় চারতলা বিশিষ্ট (নিচতলা ফাঁকা থাকবে) ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
চারতলাবিশিষ্ট প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে এক হাজার ২০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। অন্যদিকে, তিনতলাবিশিষ্ট মডেল মসজিদগুলোয় একত্রে ৯০০ জন মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজ কক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ই-কর্নার, বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের থাকার ব্যবস্থাসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
যে ৫০ উপজেলায় উদ্বোধন হচ্ছে মডেল মসজিদ
মডেল মসজিদ উদ্বোধন হবে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, গোপালগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, মাদারীপুরের শিবচর, নরসিংদীর শিবপুর, মুন্সিগঞ্জ সদর, শরীয়তপুরের জাজিরা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, জয়পুরহাট সদর, বগুড়ার দুপচাচিয়া ও গাবতলী, পাবনার সাথিয়া সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রাজশাহীর বাঘা, কুড়িগ্রাম সদর ও রৌমারি, দিনাজপুর সদর, ঠাকুরগাঁও সদর, নীলফামারী সদর, ডোমার, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর, বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দিগঞ্জ, বরগুনার তালতলী, ভোলার মনপুরা ও পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায়।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর, চাঁদপুর সদর, নোয়াখালী সদর, কুমিল্লা সদর, দেবীদ্বার, লালমাই ও সদর দক্ষিণ, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, ফেনী সদর, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই, বাগেরহাটের কচুয়া, রামপাল ও সরণখোলা, ঝিনাইদহ সদর, কুষ্টিয়া জেলা সদর, খুলনার ডুমুরিয়া, নড়াইল সদর ও কালিয়া, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও কলারোয়া, হবিগঞ্জ সদর, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে।
অর্থসংবাদ/এসএম