তিনি বলেন, আজকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চালু করেছি। দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, আমাদের সাধারণ মানুষ যেন সবাই যাতায়াত করতে পারে। ট্রাফিক জ্যাম থেকে মুক্তি পায়। আর্থিকভাবে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বরং লাভবান হয় এবং সময়ের সঙ্গে যেন চলতে পারে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই যোগাযোগ ব্যবস্থা করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছিলাম।
শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন শেষে অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন আমাদের স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এটাই আমার বড় আকাঙ্ক্ষা। বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না।
পাতাল রেল নির্মাণের আভাস
উড়ালের পর এবার পাতাল রেল করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একের পর এক স্বপ্ন পূরণ করছি। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বপ্ন পূরণে সবসময় কাজ করে। আমার কাছে ক্ষমতা হলো জনগণের সেবা করা। দেশের মানুষ যেন সুখে থাকে আমরা সেটাই চাই। এজন্য কাজ করে যাচ্ছি। মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছি। রুটটি হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।
তিনি বলেন, জাতি আওয়ামী লীগের কাছে যা চায় তা পাবে। কারণ মানুষকে ভালো রাখাই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য।
বিএনপি-জামায়াত মানেই ধ্বংসের রাজনীতি
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি মানেই ধ্বংসের রাজনীতি। ২৮ অক্টোবর পুলিশ যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। অথচ তারা কী করল? রাস্তায় পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করল, আওয়ামী লীগ ও মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করল। এটাই কি রাজনীতি? রাজশাহীতে মাটিতে ফেলে পুলিশ হত্যা করেছিল, সেটা স্মরণ রাখা দরকার। আমি ঢাকার মানুষকে বলব, যারা আগুন দিতে আসবে তাদের প্রতিহত করতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্বালাও-পোড়াও এটাই বিএনপির উৎসব, এটাই তাদের চরিত্র। তাদের আন্দোলন হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন করা, ধ্বংস করা, পুলিশের ওপর হামলা করা। কীভাবে এটা বন্ধ করতে হয় সেটা আমাদের জানা আছে। খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমি নাকি প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা দলের প্রধানও হতে পারব না। আজ কে, কোথায় আছে। আমি জনগণের সেবা করতে চাই, দেশের উন্নয়ন করতে চাই। আমি দারিদ্র্য কমিয়ে এনেছি, খালেদার সময় দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ উন্নত হয়, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
নৌকা এবারও জিতবে
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনো সময় ঘোষণা করা হতে পারে। নির্বাচনে যাকে প্রার্থী দিই তাকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। এবার নৌকা জিতবেই। নৌকা মার্কা পারে স্বাধীনতা দিতে, নৌকা মার্কাই পারে উন্নয়ন দিতে। আমি ঢাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ করব, একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই এত উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেটা আমরা নির্ধারণ করব। যাকে মনোনয়ন দেব ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে তার পক্ষে কাজ করতে হবে। যেন আবারও আমরা এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এখনও অনেক উন্নয়নকাজ বাকি, সেগুলো যেন শেষ করতে পারি। কারণ, অগ্নি-সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীরা যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে এ দেশটাকে টিকতে দেবে না। সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
মেট্রোরেলে ২৫ মিনিটে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল
মেট্রোরেলে চড়ে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মাত্র ২৫ মিনিটে মতিঝিলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর ২টা ৪১ মিনিটের দিকে মেট্রোরেলে আগারগাঁও থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর ৩টা ৬ মিনিটে রেলের মতিঝিল প্রান্তে পৌঁছান।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের পর দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও রেলস্টেশন থেকে সফরসঙ্গীদের নিয়ে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে ছিলেন ২০০ আমন্ত্রিত অতিথি।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আরামবাগের জনসভার মঞ্চে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ওই জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকে দলে দলে জড়ো হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
অর্থসংবাদ/আজাদ