সূত্র জানায়, প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ১৬.৩৪০০ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৭১৩ কোটি ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮৮ টাকা টাকা। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই এলএনজি সরবরাহ করবে।
সূত্র জানায়, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য কাতার ও ওমানের সঙ্গে দুটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। স্পট মার্কেটে এলএনজির মূল্য স্বাভাবিক মূল্যেও চেয়ে বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্পট মার্কেটে এলএনজির আমদানি বন্ধ ছিল। চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। গ্যাসের ঘাটতির ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে এবং গ্যাসের উর্ধ্বমূল্য বিবেচনায় প্রয়োজনে বর্ধিত মূল্যে হলেও গ্যাস সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ অবস্থায় স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানির বর্ধিত আমদানি বর্ধিত ব্যয় নির্দিষ্ট শ্রেণির ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আদায়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ১৪ টাকা ঘনমিটার, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৩০ টাকা ঘনমিটার এবং বাণিজ্যিক (হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ও অন্যান) ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৩০.৫০ টাকা ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়, যা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।
দেশের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য স্পট মার্কেট থেকে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য অনুমোদিত ৯ কার্গোর অতিরিক্ত ৩ কার্গো এলএনজি ক্রয়ের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী) নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন।
উল্লেখ্য বিদ্যুৎ, শিল্প ও সার কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এমএসপিএ প্রস্তুত করে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করা হয় এবং সে প্রেক্ষিতে এমএসপিএ টি চূড়ান্ত করা হয়। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের ভিত্তিতে পেট্রোবাংলা এমএসপিএ অনুস্বাক্ষরকারী ২১ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চূড়ান্ত করা এমএসপিএ স্বাক্ষর করে। এরপর ২০২০ সালে থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ৬০টি দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ৫১টি কার্গো এলএনজি গ্রহণের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো এলএনজি ক্রয় করা প্রয়োজন। ২০২৩ সালের ২৪তম এলএনজি কার্গো আমদানির দাখিল করা দরপ্রস্তাব পর্যালোচনায় ২০২৩ সালের ২৪তম এলএনজি কার্গোর জন্য দাখিলকৃত দরপ্রস্তাবটি বিগত কয়েক মাসে পিপিসি কর্তৃক দাখিল করা সুপরিশ করা দরের চেয়ে বেশি হওয়ায় এবং পুনঃদরপ্রস্তাব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকায় পুনরায় দরপ্রস্তাব আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়। ফলে সার্বিক বিবেচনায় এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২১টি প্রতিষ্ঠানের কাছে স্পট মার্কেট থেকে ডিসেম্বর মাসের জন্য এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের দরপ্রস্তাব করলে ৫টি প্রতিষ্ঠান এতে সাড়া দেয়। টোটালএনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড প্রতি এমএমবিটিইউ ১৬.৩৪০০ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৭১৩ কোটি ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮৮ টাকা।
অর্থসংবাদ/এমআই