মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আজ

মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আজ

কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ নভেম্বর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।


কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী ঘিরে অর্থনীতির নতুন স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। গভীর সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি মাতারবাড়ীতে বাণিজ্যিক ও এনার্জি হাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ফলে মাতারবাড়ীকে ঘিরেই অর্থনীতির অপার সম্ভাবনার বিস্তার ঘটবে।


নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর। চট্টগ্রাম, মোংলা এবং পায়রা বন্দরের চাঞ্চল্যও বেড়ে যাবে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের কারণে। মাতারবাড়ীর কারণেই অত্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।


চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যা দেশের জিডিপি ও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে বাড়বে বৈদেশিক আয়ও। মাতারবাড়ী থেকেই বিশ্বের যে কোনো দেশে সরাসরি পণ্য পরিবহন করা যাবে। এতে আমদানি-রপ্তানি খাতে সময় এবং পরিবহন ব্যয় দুটোই কমবে।’


চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে দেশের আমদানি ও রপ্তানি ব্যয় এবং সময় দুটোই কমবে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশে আরও বেশি করে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রবন্দরকে ঘিরে বাণিজ্যিক ও এনার্জি হাব প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিণত হচ্ছে মাতারবাড়ী।


জানা যায়, দেশের আমদানি-রপ্তানি গতিশীল এবং ব্যয় কমাতে মহেশখালীতে প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। আগামী ২০২৬ সালে এ বন্দর পুরোদমে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দরে থাকবে একটি ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি, একটি ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জাহাজ বার্থিং জেটি। থাকবে তিনটি টাগ বোট, একটি পাইলট বোট, একটি সার্ভে বোটসহ কার্গো হ্যান্ডেলিং ইক্যুইপমেন্ট টিওএস অ্যান্ড সিকিউরিটি সিস্টেম। গভীর সমুদ্রবন্দরকে জাতীয় মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক। একে কেন্দ্র করে মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে বাণিজ্যিক হাব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অত্র অঞ্চলে উন্নত যোগাযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ আনা হচ্ছে।


মাতারবাড়ীকে ‘এনার্জি হাব’ হিসেবে গড়ে তুলতে এলএনজি টার্মিনাল, এলপিজি টার্মিনাল, অয়েল টার্মিনাল, গ্যাস ট্রান্সমিশন এবং সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব’ হিসেবে গড়ে তুলতে অয়েল রিফাইনারি, এনার্জি ও ফুড স্টোরেজ, ট্যুরিজম, এমব্যাঙ্কমেন্ট ও ওয়াটারফ্রন্ট ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজও চলছে। মাতারবাড়ীর সঙ্গে দেশ-বিদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রসারণ প্রকল্পটি চলতি বছরেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পর্যটন নগরী ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা আজই উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
এনসিপিকে শাপলার বিকল্প প্রতীক নিতে চিঠি দেবে ইসি
শর্ত পূরণ করেছে এনসিপিসহ দুটি দল: ইসি
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ: আইজিপি
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ
দূষিত বায়ুর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী কোনো সহিংসতা নেই: প্রধান উপদেষ্টা