মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কমেছে লেনদেন

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কমেছে লেনদেন
সহজলভ্য লেনদেন, বিল পরিশোধ, ঋণ গ্রহণসহ নানান সুবিধার কারণে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে একইসাথে সক্রিয় গ্রাহক এবং লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট গ্রাহক বেড়েছে। কিন্তু কমেছে সক্রিয় গ্রাহক এবং লেনদেন। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৫০ লাখ ৪১ হাজার, যা আগস্টে ছিল ৫০ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৭৬ জন।

তবে গত এপ্রিলে গ্রাহকসংখ্যা ২০ কোটির ঘর অতিক্রম করে। ওই সময় গ্রাহক ছিল ২০ কোটি ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২১০। এরপর মে মাসে গ্রাহক বেড়ে হয় ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার ১৮৬ জন। জুনে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৬ এবং জুলাইয়ে ছিল ২০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৩৪ জন।

গ্রাহকসংখ্যা বাড়লেও সেপ্টেম্বরে লেনদেন কিছুটা কম হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগস্টের চেয়ে ১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা কম। ওই মাসে লেনদেন হয় ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। সার্বিক লেনদেন কিছুটা কমলেও দৈনিক গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। এ সময় গড়ে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ৩ হাজার ৬১২ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৩ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা।

বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ডাক বিভাগের সেবা নগদ একই ধরনের সেবা দিচ্ছে।

এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহক সম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে ঝামেলা ছাড়াই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। সেপ্টেম্বরে নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ৪২ লাখ ৯১ হাজার ৭ ও নারী ৯ কোটি ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭১। এ সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬-এ।

নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি—এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় গণ্য করে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে সেপ্টেম্বর শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার, যা আগস্টে ছিল ৮ কোটি ১৯ লাখ ৬৩ হাজার। সেই হিসাবে চলতি মাসে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা কিছুটা কমেছে।

সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ঢুকেছে ৩৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। আর উত্তোলন হয়েছে ২৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। রেমিট্যান্স এসেছে ৫২০ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন সেবার দুই হাজার ৯১৬ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয়। কেনাকাটায় ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের বেশিরভাগই বিকাশের দখলে।

অর্থসংবাদ/এমআই

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ